বিনোদন ডেস্ক ॥
বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীত তারকা আসিফ আকবর। তাকে ভালোবেসে শ্রোতা-ভক্তরা গানের যুবরাজ বলেও সম্মানিত করে থাকেন। ১৯৭২ সালের এই দিনে জন্ম নেয়া এই গানের আইকন আজ ৪৭ বছরে পা দিলেন। আজকের সুন্দর এই দিনটাতে আসিফের কাছের মানুষরা তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন নানাভাবে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভক্তদের অন্যরকম ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন আসিফ।
সেই রাত বারোটার পর থেকেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা আসতেই আছে। কিন্তু মন ভালো নেই আসিফ আকবরের। কারণ মাত্র দুই দিনে আগেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন প্রিয় শিল্পী শাহনাজ রহমাতুল্লাহ। সদ্য প্রয়াত এই শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি গান প্রকাশ করতে যাচ্ছেন আসিফ। গানটির শিরোনাম ‘লাশ’।
আসিফ আকবর বলেন, ‘আগামী ২৮শে মার্চ সৈকত নাসিরের পরিচালনায় আসছে ‘লাশ’। রিয়েলিটি শো মার্কস অলরাউন্ডার এর প্রতিযোগী তরুণ সুরকার গীতিকার প্রিন্স এর কথা সুর এবং মীর মাসুমের কম্পোজিশনে লাশ গানটি আসছে ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের ব্যানারে। ফুঁ এর নায়িকা সিনি স্নিগ্ধা আর ফারহান খান রিও’র সঙ্গে অভিনয়ে আছি আমিও। আমার অত্যন্ত প্রিয় একটি গান, আশা করি সবার ভাল লাগবে।’
এর আগেও দেখা গেছে জন্মদিনে খুব বেশি উচ্ছাস প্রকাশ করেন না আসিফ। কারণ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। এই দিনটিতে ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করা হয়। দেশের জন্য প্রাণ দেয়া শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজের জন্মদিনের উৎসব পালন করা থেকে বিরত থাকেন তিনি।
২০০১ সালে প্রথম অ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ প্রকাশ করেই রাতারাতি তারকা বনে যান আসিফ আকবর। তার এই অ্যালবামটি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিক্রিত অ্যালবাম বলে স্বীকৃত।
সে সময় জলে-বনে-মাঠে-হাটে-সর্বত্রই মানুষের মুখে ফিরত আসিফের এ অ্যালবামের গান। বিশেষ করে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘চোখেরই জলে লেখা’, ‘ক্ষমা করে দিও আমাকে’, ‘জ্বালা জ্বালা এই অন্তরে’ শিরোনামের গানগুলো।
এই অ্যালবামের সাফল্যের পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি আসিফ আকবরকে। একক, ফিক্সড, চলচ্চিত্র যেখানেই গান করেছেন আসিফ সেখানেই তার গান লুফে নিয়েছেন শ্রোতারা। তার অনেক গান আজও মানুষের মুখে শোনা যায়।
তবে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে গান গেয়ে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন ক্রিকেট পাগল এই গায়ক। তার ‘বেশ বেশ বেশ-সাবাশ বাংলাদেশ’ গানটি জনপ্রিয়তার বিচারে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অঘোষিত থিম সং-এ পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর যে প্রান্তেই খেলা হোক, সেখানে বাংলাদেশিরা থাকলে আসিফের এই গানটি বাজতে শোনা যায়।
ক্যারিয়ারে অসংখ্য স্বীকৃতি তিনি অর্জন করেছেন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য সেরা শিল্পী হিসেবে দুইবার জাতীয় চলচিত্র পুরষ্কার এবং ৬ বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার জয়। এখনও নিয়মিত গান প্রকাশ করেই চলেছেন আসিফ।
আসিফ আকবরের জন্ম কুমিল্লার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তার বাবার নাম আলী আকবর ও মা রোকেয়া আকবর। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সালমা আসিফ মিতুকে বিবাহ করেন। তাদের রণ এবং রুদ্র নামে দুটি সন্তান রয়েছে।