শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > জাতীয় > ছয়টি জাহাজ দিতে আরো সময় চেয়েছে চীনা সিএমসি

ছয়টি জাহাজ দিতে আরো সময় চেয়েছে চীনা সিএমসি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥

ঢাকা: বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি)-এর জাহাজ বহরে জাহাজের সংখ্যা বাড়াতে ছয়টি নতুন জাহাজ ও তিনটি অয়েল ট্যাংকার কেনার উদ্যোগ নেয়া হয় তিন বছর আগে। পরিবহণ সক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যবসায়িক চাহিদা পূরণ, বিএসসিকে লাভজনক করণ, দেশের জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্বার জন্য এগুলো ২০১৮ সালের জুন মাসে চীন থেকে বাংলাদেশে পৌঁছানোর সময় নির্ধারণ ছিলো। কিন্তু পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো জাহাজগুলো আসেনি। এমনকি আগামী বছর জুনের আগে এ জাহাজ ও অয়েল ট্যাংকারগুলো বাংলাদেশে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে বিএসসি।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশ সফরকালে চীনের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে এই বিষয়ে ঋণ চুক্তি হয়। এ জাহাজ, অয়েল ট্যাংকার তৈরি করছে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি)। প্রতিটি জাহাজ প্রায় ৩৯ হাজার ডেড ওয়েট টন (ডিডব্লিউটি) ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন। জাহাজগুলো চীনের জিয়াংশু প্রদেশের ওয়াই জেড জে শিপইয়ার্ডে নির্মাণাধীন।

বিএসসি সূত্র জানায়, সিএমসি আরো এক বছর সময় চেয়েছে। এখনও জাহাজ, অয়েল ট্যাংকার ও বাল্ক ক্যারিয়ার তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। এছাড়া ঋণচুক্তি স্বাক্ষরে বিলম্ব, মার্কিন ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হারের পরিবর্তন, নতুন কাজ সংযোজনের কারণেই এক বছর সময় লাগবে। ছয়টি নতুন জাহাজ ক্রয়, তিনটি অয়েল ট্যাংকার এবং তিনটি বাল্ক ক্যারিয়ার সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা। এরমধ্যে চায়না এক্সিম ব্যাংকের ঋণ ১ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা।

বিএসসি আরো জানায়, প্রকল্পে নতুন কিছু অঙ্গ যোগ হয়েছে। ফলে অতিরিক্ত ৯৫ কোটি টাকা সরকারি খাত থেকে মেটানো হবে। তবে জাহাজ আমদানীতে ভ্যাট প্রত্যাহারের কারণে সামগ্রিকভাবে ২০৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় কমেছে।

প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ বাংলানিউজকে বলেন, বিএসসি’র পক্ষে কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা তাদের (চীনা সিএমসি)। ছয়টি নতুন জাহাজ, তিনটি অয়েল ট্যাংকার এবং তিনটি বাল্ক ক্যারিয়ার দিতে কোম্পানিটি আরো এক বছর সময় চেয়েছে। আশা করছি ২০১৯ সালের জুন মাসে আমরা এগুলো হাতে পাব।’

বিএসসি সূত্র জানায়, ছয়টির মধ্যে তিনটি জাহাজ নির্মাণের পর ভাসানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এই তিনটি দ্রুত সময়ে লঞ্চিং করবে। তবে বাকি তিনটি জাহাজের আরো কিছু টেকনিক্যাল কাজ শেষে বাংলাদেশী নাবিকেরা জাহাজ নিয়ে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। অবশিষ্ট তিনটি জাহাজের নির্মাণ কাজ এখনও চলছে। সিডিউল অনুযায়ী বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে এগুলো চীন ত্যাগ করবে। এর জন্য আরো কিছু সময় লাগবে।

জাহাজ পরিচালনা কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য ৫ জন নাবিক বর্তমানে চীনে অবস্থান করছেন। তারা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো দেখভাল করছেন এবং জাহাজের সরবরাহ পেলে তারা চীন থেকে বাংলাদেশে জাহাজগুলো নিয়ে আসবেন। সব মিলিয়ে ছয়টি নতুন জাহাজ পেতে এক বছর সময় লাগবে।

এদিকে চট্টগ্রামে একটি বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রতিদিন শত শত টন কয়লার প্রয়োজন হবে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা কয়লা বিএসসির জাহাজে করে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। এ কয়লা পরিবহনই হবে বিএসসির জন্য ভবিষ্যতে বড় ধরনের আর্থিক খাত।

১৯৭২ সালে শুরু হয় বিএসসির যাত্রা। এক সময় বিএসসির বহরে ৩৮টি জাহাজ ছিল। ওই জাহাজের সংখ্যা কমে ১২টিতে এসে ঠেকে। অন্তত ১২ বছর পর ২০১৪ সাল থেকে বিএসসির বহর আরেক দফা ছোট হয়। ৯টি জাহাজ বিক্রি করে দেয়ায় এখন বহরে জাহাজ আছে মাত্র তিনটি। এর মধ্যে দুইটি সচল। একটি অচল। বাংলানিউজ