বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তার আগেই চূড়ান্ত হচ্ছে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনবল কাঠামো। বিভক্তির তিন বছর চার মাস পর জনবল কাঠামো চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত জনবল কাঠামোতে কিছু নতুন পদ সৃষ্টি করা হলেও পুরাতন ৮৫২টি পদ বিলুপ্ত করা হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২ হাজার ৪২২টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জন্য এক হাজার ৮৫৮টি পদ প্রস্তাব করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রস্তাব ইতিমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির আগামী বৈঠকে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হতে পারে বলে স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র জানিয়েছে।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নগর উন্নয়ন) আশোক মাধব রায় বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ঢাকার উভয় সিটি কর্পোরেশনের জনবল কাঠামোর প্রস্তাব চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছি। শিগগিরই তা প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র জানায়, ১৯৯০ সালের জনবল কাঠামো অনুযায়ী ডিসিসিতে স্থায়ী জনবল ছিল ৪ হাজার ৯০০। পরে ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, পরিবেশ সার্কেল বিভাগ তৈরিসহ কিছু চালকের পদ সৃষ্টি করায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ১৩২টিতে। কিন্তু সেখানে এমন কিছু পদ ছিল, ওই পদে থাকা কর্মচারীদের কাজ কী সেটাও কেউ জানত না। তাই নতুন জনবল কাঠামোতে এ ধরনের পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে।
নতুন জনবল কাঠামো প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক কর্মকর্তা জানান, সিটি কর্পোরেশনের সর্বোচ্চ নির্বাহী ক্ষমতার মালিক মেয়র পদটি হলেও আগের অর্গানোগ্রামে মেয়রের স্টাফসংখ্যা ছিল ৮ জন। অথচ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার স্টাফ ছিল ১১ জন। প্রস্তাবিত কাঠামোতে মেয়র দফতরের স্টাফ ঠিক রেখে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার স্টাফ ৫ জন করা হয়েছে। যান্ত্রিক বিভাগের একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর স্টাফ ছিল ৭ জন। সেটা ৩ জন করা হয়েছে। পাশাপাশি মশার ওষুধ ছিটানোর ৪৬০টি স্প্রে-ম্যানের পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে।
এর কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছেন- সারা বছর মশার ওষুধ ছিটানোর প্রয়োজন হয় না। আবার কিছু কিছু সময়ে অনেক বেশি ওষুধ ছিটানোর জন্য এর চেয়ে বেশি স্প্রে-ম্যানের প্রয়োজন হয়। ফলে অনেক সময়েই স্প্রে-ম্যানরা অলস বসে থেকে শুধু বেতন নেন। এখন থেকে মশার ওষুধ সরবরাহকারী ঠিকাদারকেই চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ স্প্রে করার দায়িত্ব দেয়া হবে এবং তারাই স্প্রে-ম্যান সরবরাহ করবে। ওষুধ কেনার দরপত্র বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে এই শর্তও যুক্ত থাকবে।
একইভাবে ডিসিসির যান্ত্রিক বিভাগে মিলার আদার অপারেটর, ফিটার- এ ধরনের কিছু পদ ছিল। এসব পদের কাজ কী সেটাও কেউ জানতেন না। এ রকম ৮০টি পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। একই কারণে বাস টার্মিনালগুলোতে মালি, ইলেক্ট্রিশিয়ান, নিরাপত্তা প্রহরীর মতো অনেক পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। কারণ টার্মিনালগুলো ইজারাদারের মাধ্যমে চালানোর কারণে সব বিষয়ই ইজারাদারের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ায় এসব জনবলের কোনো কাজ থাকে না। সূত্র: যুগান্তর