আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
এগারো জন নারী ও তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে চীনের ‘সিরিয়াল কিলার’ হিসেবে পরিচিত এক ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। প্রথম ধর্ষণ ও খুনের প্রায় তিন দশক পর বৃহস্পতিবার সকালে ওই ধর্ষককে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়।
গত বছরের মার্চে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের গ্যানসু প্রদেশের বাইয়িন শহরের একটি আদালত তাকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে দেয়া এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালত।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের সুপ্রিম কোর্ট অভিযুক্ত এ ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমোদন দিয়েছিল। গ্যানসু ও পার্শ্ববর্তী ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে ১৯৮৮ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে অন্তত ১১ জন নারী ও তরুণীকে ধর্ষণ, হত্যা করেছে গাও চেংইয়ং (৫৪) নামের ওই ধর্ষক। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগও আছে।
গত বছরের মার্চে গ্যানসুর বাইয়িন সিটি ইন্টারমেডিয়েট পিপলস কোর্ট চেংইয়ংকে দোষী সাব্যস্ত করেন। ডাকাতি এবং ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
চেংইয়ংয়ের টার্গেটে পরিণত হতেন লাল পোশাক পরিহিত তরুণীরা। রাস্তায় কোনো তরুণীকে দেখার পর তাকে অনুসরণ করে বাসা পর্যন্ত যেতেন। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, সুযোগ বুঝে কৌশলে বাসায় প্রবেশের পর ওই তরুণীকে ধর্ষণ এবং গলাকেটে হত্যা করতেন এই ধর্ষক। পরে মরদেহ খণ্ড-বিখণ্ড করতেন। তার এই নৃশংসতার শিকার হয়েছিলেন আট বছরের এক শিশুও।
বেইজিং ইয়ুথ ডেইলি বলছে, ২০১৬ সালে চেংইয়ংকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নৃশংসতার মাত্রা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, কিছু নারী ও তরুণীর বিশেষ অঙ্গ কেটে ফেলতেন এই সিরিয়াল কিলার। তাকে ধরতে পুলিশের কয়েক বছর কেটে যায়।
এই ধর্ষকের ব্যাপারে পুলিশের কাছে প্রথম তথ্য আসে ২০০৪ সালে। পরে তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ৩০ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ। সেই সময় পুলিশ জানায়, বিকৃত যৌনাকাঙ্ক্ষা ও নারীদের প্রতি ঘৃণা থেকে এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে চেংইয়ং। সে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন, অসামাজিক এবং ধূর্ত প্রকৃতির।
সূত্র : এএফপি।