শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > চলছে অংক কষা উপজেলা নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপির অপেক্ষা

চলছে অংক কষা উপজেলা নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপির অপেক্ষা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ সরকার পতনের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য খুব শিগগিরই আবারো কঠোর আন্দোলনে যেতে চায় বিএনপি। এবারের আন্দোলন যেন ব্যর্থ না হয় তাই আটঘাট বেঁধেই নামতে চায় তারা। এজন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি হিসেবে নিজেদের ব্যর্থতাগুলো চিহ্নিত করে সংগঠন গুছাচ্ছে দলটি।

যদিও দাবি আদায়ে সমঝোতা ও সংলাপ চায় বিএনপি। তবে সরকারকে এই সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বান বিএনপি অনির্দিষ্টকাল জানাবে না। বরং দাবি আদায়ে দল গুছিয়ে খুব শিগগিরই কঠোর আন্দোলনে যাবে। এমন কথা বলেছেন সয়ং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। অবশ্য আন্দোলনে নামতে আগামী উপজেলা নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বিরোধী জোট।

‘বিএনপি অতিদ্রুত নির্বাচন চায়, কিন্তু সরকার বলছে পাঁচ বছর পর নির্বাচন হবে, এ অবস্থায় সরকার দাবি না মানলে বিএনপি কবে আন্দোলনে সক্রিয় হবে’ মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিএনপি অতিদ্রুত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। আমরা কর্মসূচি দিয়েছি। দলের মহাসচিব কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কিন্তু সরকার সভা-সমাবেশ, মিছিল অবস্থান করতে জায়গা দেয় না। এছাড়া আমাদের অনেক নেতা নিহত হয়েছে, অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাই সবকিছু গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে। তবে খুব শিগগিরই আমরা দল গুছিয়ে নিয়ে আন্দোলনে সক্রিয় হবো।’

সংবাদ সম্মেলনে সংলাপের বিষয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিএনপি অনির্দিষ্টকাল ধরে সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বান জানাবে না। জনগণের সমর্থনে বারবার দেশ পরিচালনায় অভিজ্ঞ বিএনপি জানে কোন পরিস্থিতিতে কী সিদ্ধান্ত নিতে হয়। রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক বিষয়ে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন কৌশল ও কর্মপন্থা নিরূপণ করেই বিএনপি এগিয়ে যাচ্ছে।’ সময় থাকতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের পর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সংলাপ, পরবর্তী আন্দোলন, ব্যর্থতা এবং সংগঠন গতিশীল ও সুসংহত রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়।

আলাপকালে নেতারা জানান, এবার সরকার পতনের পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে দলটি। এজন্য অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দলের সব পর্যায়কে শক্তিশালী করার কাজ চলছে। সেই সঙ্গে চলছে দলের মূল সংগঠন বিএনপিসহ এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নিষ্ক্রীয়, আত্মগোপনে থাকা নেতাদের তালিকা তৈরির কাজ। একই সঙ্গে ত্যাগী ও রাজপথের নেতাদের তালিকাও হচ্ছে। কারণ প্রয়োজন মতো কমিটিগুলোতে সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চেয়ারপারসন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, ‘বিএনপি সমঝোতা চায় বলেই আহ্বান জানিয়ে আসছে। তার মানে এই নয় যে বিএনপি কঠোর আন্দোলনে যাবে না। খুব শিগগিরই খালেদা জিয়া কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।’

অবশ্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের একজন নীতি নির্ধারক বাংলামেইলকে বলেন, ‘বিএনপি মনে করে উপজেলা নির্বাচনে পাঁচ সিটি নির্বাচনের মতো নিরঙ্কুশ জয় পাওয়া গেলে এমনিতেই দল চাঙ্গা হবে। আর সরকারও চাপে পড়বে। তখন দাবি আদায়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচিতে গেলে খুব অল্প সময়ে সরকারের পতন অনিবার্য। সেজন্য দল গোছানোর পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাচনে জয়ের জন্য কাজ চলছে।’

চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শামসুজ্জামান দুদু বাংলামেইলকে বলেন, ‘সব আন্দোলনের সফলতা ও ব্যর্থতা রয়েছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিএনপি সফল। কারণ জনগণ বিএনপির দাবিকে সমর্থন দিয়েছে। তারা এ সরকারকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেনি। মাত্র ৫ শতাংশ ভোটে এই সরকার নির্বাচিত হয়েছে। বাকি ৯৫ ভাগ মানুষ বিএনপির সঙ্গে আছে, আর এটাই আমাদের সফলতা। তবে ব্যর্থতা যেটুকু আছে তা কাটানোর কাজ চলছে।’

বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদীন ফারুক বাংলামেইলকে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন দেশের জনগণের স্বার্থে ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে আবারো সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি জনগণের দল, বিএনপি কঠোর কর্মসূচি দিতে চায় না। তাই সরকারকে আবারো সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছেন চেয়ারপারসন। তবে বিএনপি সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বান জানিয়েই বসে থাকবে না। খুব দ্রুতগতিতে সংগঠনকে শক্তিশালী করার কাজ চলছে। সময় হলেই চেয়ারপারসন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।’ বাংলামেইল২৪ডটকম