বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঈটচবি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের আবাসিক সঙ্কট বর্তমানে চরম আকার ধারণ করেছে। কক্ষ না পেয়ে কেউ কেউ এক সিটে তিনজন করে থাকছেন গণরুমে। এমন অবস্থায় বিঘ্নিত হচ্ছে পড়ালেখার পরিবেশ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আট হাজার ছাত্রীর জন্য আবাসন ব্যবস্থা আছে মাত্র এক হাজার চারশ জনের। প্রশাসন বাকি অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষার্থীর থাকার কোনো ব্যবস্থা করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বাইরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছেন। সেখানেও রয়েছে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সঙ্কট। নিরাপত্তারও নেই কোনো নিশ্চয়তা।
তবে প্রতিটি হলেই আসনের চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষার্থী থাকেন বলে জানা গেছে। ক্ষমতাসীন দলীয় ছাত্রসংগঠনের ছত্রছায়ায় অনেকেই গণরুমে থাকছেন। সম্প্রতি শামসুর নাহার হলে ওঠা বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সালমা জান্নাত রিতা বাংলামেইলককে জানান, তারা চারজনের একটি কক্ষে আটজন থাকছেন।
একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী প্রীতিলতা হলের সামিয়া খান তানিয়া বাংলামেইলকে বলেন, ‘হলে উঠতে চাইলে সবাইকে প্রথমদিকে ডাবলিং করে থাকতে হয়। আমি নিজেও প্রথমদিকে ডাবলিং ছিলাম। এখনো অনেক শিক্ষার্থী ডাবলিং থাকে।’
ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত ছাত্রী থাকার ফলে প্রায় প্রতিটি হলের পরিবেশই নোংরা, দুর্গন্ধময় ও ছারপোকা আক্রান্ত বলে ছাত্রীরা জানান। এ বিষয়ে প্রীতিলতা হলের প্রভোস্ট ড. মাহাবুবুল হক বাংলামেইলকে বলেন, ‘একটি আবাসিক হল শুধু থাকার জন্য নয়, শিক্ষা কার্যক্রমসহ সব ধরনের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য। এ জন্য হলে অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকার ফলে তাদের অধিকারগুলো সঠিকভাবে পাচ্ছে না। ছাত্রীসংখ্যার অনুপাতে হল বৃদ্ধি পায়নি। আবাসিক সঙ্কট নিরসনে দ্রুত আরো বেশি হল নির্মাণ করা প্রয়োজন।’
এদিকে নবনির্মিত শেখ হাসিনা হলের কাজ শেষ হওয়ার তিন মাস পার হলেও হলে উঠতে পারছেন না ছাত্রীরা। ৩৩০ সিট বিশিষ্ট এই হলে ছাত্রীরা উঠতে পারলে অনেকটা আবাসিক সমস্যা লাঘব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরী বাংলামেইলকে বলেন, ‘শেখ হাসিনা হলের কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় হলে ছাত্রী উঠাতে পারছি না। হয়তো এ মাসের শেষের দিকে ছাত্রীরা হলে উঠতে পারবে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজিম বাংলামেইলকে বলেন, ‘মেয়েদের এ সঙ্কটকে সামনে রেখে তাদের আবাসনের কথাই আগে ভাবছে প্রশাসন। তাদের জন্য একটি হলের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন হয়তো সঙ্কট অনেকটা লাঘব হবে।’ বাংলামেইল২৪ডটকম