শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > ঘোষিত সময়ে হচ্ছে না ২০০ পরিদর্শক নিয়োগ

ঘোষিত সময়ে হচ্ছে না ২০০ পরিদর্শক নিয়োগ

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘোষণা সত্ত্বেও আগামী দুই মাসে ২০০ কারখানা পরিদর্শক নিয়োগ দিতে পারছে না সরকার। এ সময়ের মধ্যে মাত্র ৫৮ জন পরিদর্শক নিয়োগ দেয়া সম্ভব হবে। বাকি ১৪২ জন নিয়োগের প্রক্রিয়াটি প্রশাসনিক জটিলতায় আটকে গেছে বলে জানিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দেয়া অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করার সময় চলতি বছরের মধ্যে ২০০ পরিদর্শক নিয়োগের সময় বেঁধে দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নও এতে সমর্থন জানায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদের আগামী দুই মাসের মধ্যে ২০০ পরিদর্শক নিয়োগের ঘোষণা দেন।

জানা গেছে, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদফতরের পরিদর্শকের সংখ্যা বর্তমানে ১০৩। এর মধ্যে ৩৫টি পদ শূন্য রয়েছে। এর বাইরে পরিদর্শক নিয়োগ করতে হলে পরিদফতরের জনবল কাঠামোয় পরিবর্তন আনতে হবে। সে কাজও শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে একটি প্রস্তাবনা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এতে ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে পরিদর্শকের ১৩০টি নতুন পদ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। এছাড়া রাজউকের পরিদর্শক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৩২ জনকে নিয়োগের কথা রয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজউক থেকেও নিয়োগ-সংক্রান্ত একটি চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগে ৩২ এবং ফায়ার সার্ভিসে ২৬০ জন নতুন পরিদর্শক নিয়োগের কথা রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পোশাক খাতের দুর্ঘটনার পর থেকেই নিয়মিত আন্তর্জাতিক মহলকে হালনাগাদ তথ্য দিয়ে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে অগ্রগতি না থাকলে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়।’

এ প্রসঙ্গে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার বলেন, সময়ের বিষয়টি মাথায় রেখে অ্যাডহক ভিত্তিতে পরিদর্শন নিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শূন্য পদে ৩৫ ছাড়াও ২৩ জন পরিদর্শক একটি প্রকল্পের আওতায় নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। বাকি ১৪২ জন্য পরিদর্শক নিয়োগে কিছু আইনগত বাধা রয়েছে। প্রস্তাবিত কলকারখানা পরিদর্শন পরিদফতরের সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদনের আগে এটা সম্ভব নয়।

সূত্রমতে, জিএসপি পুনর্বহাল নিয়ে ডিসেম্বরে শুনানি রয়েছে। তার আগে অক্টোবরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে গৃহীত পদক্ষেপের হালনাগাদ তথ্য জানানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু পরিদর্শক নিয়োগের বিষয়টি সম্পন্ন না হলে প্রধান শর্তটিই অপূর্ণ থেকে যাবে। এতে জিএসপি ফিরে পেতে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সামনে সন্তোষজনক বক্তব্য তুলে ধরা সম্ভব হবে না।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এ প্রসঙ্গে বলেন, কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে যেকোনো পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়কে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা পাশ কাটিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের নির্দেশনাও সরকার দিয়ে রেখেছে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় থাকলে পরিদর্শক নিয়োগে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

উল্লেখ্য, তাজরীন ফ্যাশনসে আগুন এবং রানা প্লাজা ধসের পর যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা ক্রেতাদের চাপের ভিত্তিতে কারখানা নিরাপত্তা উন্নয়নে ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান শীর্ষক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয় সরকার। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে কারখানা পরিদর্শন ও এজন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ পরিদর্শক নিয়োগ।