শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পোশাকশিল্প

গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পোশাকশিল্প

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: পোশাক খাতের ৩১৯টি কারখানা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনের নেতারা বলেন, ইতিমধ্যে সক্ষমতা হারিয়ে গত তিন বছরে বন্ধ হয়েছে ৬১৮টি কারখানা। তবে আশার কথা, গত তিন বছরে নতুন আরো প্রায় ২৫০টি কারখানা উৎপাদনে এসেছে। তাই এ খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে বাজেটে গ্যাস-বিদ্যুৎ এবং অবকাঠামো খাতে নীতি সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। গতকাল শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ সম্মেলন কক্ষে তৈরি পোশাক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। এ সময় অন্যদের মধ্যে ছিলেন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান, সহসভাপতি এস এম মান্নান (কচি), মোহাম্মদ নাসির, মাহমুদ হাসান খান (বাবু), ফেরদৌস পারভেজ বিভন প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট ও ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহারের কারণে পোশাকশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হওয়া ও বিশ্ববাজারে পোশাকের দরপতনের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পোশাকের দরপতন, রিমেডিয়েশন বা পুনর্গঠনের অতিরিক্ত চাপ, উৎপাদন দক্ষতার অভাবে এ শিল্পে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ হচ্ছে না। ২০২১ সালের রূপকল্প বাস্তবায়নে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য ১০ শতাংশ হ্রাসকৃত হারে করারোপের মেয়াদ আগামী পাঁচ বছরের জন্য বৃদ্ধি করা এবং উেস কর কর্তনের হার ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের মতো করা, রপ্তানি সহায়ক সেবাগুলো ভ্যাটমুক্ত করা এবং অগ্নিনির্বাপক ও আধুনিক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ভ্যাটমুক্ত করার আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি। এক প্রশ্নের জবাবে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিজিএমইএর সদস্য সব কারখানাকে ডাটাবেইসের অধীনে আসতে হবে। সরকারি উদ্যোগে গঠিত শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে বিজিএমইএ প্রতিবছর ৮০ কোটি টাকা দেবে। এ সহায়তার জন্য সব কারখানাকে বিজিএমইএর ডাটাবেইসের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। যারা আসবে না, তারা আমাদের সহায়তা পাবে না। গ্যাস সংযোগের অভাবে বর্তমানে বিজিএমইএর প্রায় ২০০ কারখানা উৎপাদনে যেতে পারছে না। এগুলোর মধ্যে স্থানান্তরিত কারখানার সংখ্যা ৬০টি, লোড বৃদ্ধি ৭৩টি এবং নতুন সংযোজনের জন্য রয়েছে ৬৪টি। সিদ্দিকুর রহমান অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কারখানাগুলোতে গ্যাসলাইন ট্রান্সফার, লোড বৃদ্ধি এবং নতুন সংযোজন পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া পোশাক শিল্পাঞ্চলগুলোতে গ্যাসের প্রেসার অত্যন্ত কম থাকায়ও ওই সব এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা কারখানা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমছে উল্লেখ করে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সারা পৃথিবীতে সব কিছুর দাম বাড়লেও তৈরি পোশাক খাতের দাম কমছে। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুসারে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের পোশাকপণ্যের মূল্য কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। অন্যদিকে আমাদের উত্পদান খরচ প্রতিবছর বাড়ছে ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে। এ ছাড়া গত চার বছরে ডলারের বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হয়েছে ৭.৬৬ শতাংশ। অন্যদিকে গত চার বছরে ভারতীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে ৪০ শতাংশের বেশি। ফলে দেশটির প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বেড়েছে। একইভাবে তুরস্কের মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে ৬৮.৪২ শতাংশ। টাকার অতি মূল্যায়ন এবং উৎপাদন খরচ বাড়ার ফলে বাংলাদেশের কারখানাগুলোর প্রচ্ছন্ন আয় কমছে বলে মন্তব্য করেন বিজিএমইএ সভাপতি।