স্টাফ রিপোর্টার ॥
ঢাকা : দীর্ঘ একযুগ আগে গাজীপুর আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে বোমা হামলার মামলায় হাইকোর্টের আপিলে ৬ জঙ্গির ফাঁসি বহাল রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে ফাঁসির সাজা থেকে কমিয়ে ২ জনকে যাবজ্জীবন ও ২ জনকে খালাসের রায় দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ৬ জন জঙ্গি হল— এনায়েতুল্লাহ ওরফে ওয়ালিদ, আরিফুর রহমান, সাইদুর রহমান মুনশি, আবদুল্লাহ আল হোসাইন, নিজামুদ্দিন রেজা ও তৈয়বুর রহমান।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হল— মসিদুল ইসলাম ও আদনান সামি। এ মামলার অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন ২ জন আসামি; তারা হল— আশরাফুল ইসলাম ও শফিউল্লাহ।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে এ মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য আসে। এরপর এনায়েতুল্লাহ ওরফে ওয়ালিদ, আরিফুর রহমানসহ তিন আসামির পক্ষে আদালতে কথা বলেন আইনজীবীরা।
এনায়েতুল্লাহ ওরফে ওয়ালিদের আইনজীবী সাইফুর রশিদ সবুজ বলেন, ‘এ ঘটনার সময় আমার আসামির উপস্থিতি এবং সাক্ষীদের জেরা ও জবানবন্দিতে অসঙ্গতি আছে। এগুলো বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আদালত গুরু সাজা না দিয়ে লঘু সাজা দিতে পারেন।’
২০০৫ সালে বিচারিক আদালতের রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল করা হয় হাইকোর্টে। ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের শুনানীনি শেষে আজ হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, আইনজীবীর পোশাক পরে ২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির দুই নম্বর হলে ঢুকে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গি সংগঠন জেএমবির আত্মঘাতী সদস্য আসাদ ওরফে জিয়া ওরফে নাজির ওরফে নাহিদ। এতে হামলাকারী জেএমবি সদস্যসহ আইনজীবী আমজাদ হোসেন, গোলাম ফারুক, নূরুল হুদা, আনোয়ারুল আজিম, বিচারপ্রার্থী আব্দুর রব, বছির উদ্দিন, মর্জিনা আক্তার ও শামছুল হক ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
হামলার দিনই জয়দেবপুর থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। দুই বছর পর ২০০৭ সালের ৪ জুলাই পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ জেএমবি নেতা এনায়েত উল্লাহ জুয়েল, আরিফুর রহমান আরিফসহ ১৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়।
মামলার আসামিদের মধ্যে শায়খ আবদুর রহমান, আতাউর রহমান সানি, খালেদ সাইফুল্লাহ সিরাজসহ চারজনকে ঝালকাঠির বিচারক হত্যা মামলায় আগেই মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
এ ছাড়া আরেক আসামি মোল্লা ওমর শাকিল কুমিল্লার একটি ঘটনায় নিহত হন। বাকি আসামিরা আদালতে হাকিমের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এ ছাড়া মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৭০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।