শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > গাজীপুরে ২২ একর সরকারি জমি ভূমি খেকোদের পেটে

গাজীপুরে ২২ একর সরকারি জমি ভূমি খেকোদের পেটে

শেয়ার করুন

মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার ॥
গাজীপুর জেলার কাশেমপুর ভূমি অফিসের সহায়তায় দু’টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ২২ একর ৫০ শতাংশ সরকারি খাস জমি আত্মসাত করায় ওই জমি উদ্ধারে অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
জানা যায়, দু’টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি হাউজিং কোম্পানীর নামে ১৪ একর সরকারি খাস জমি নামজারি জমাভাগ করে দেয়া হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। কাশেরপুর ভূমি অফিসের আওতায় বড় ভবানিপুর মৌজার এসএ দাগের ১নং খাস খতিয়ান ও বনের গেজেটভূক্ত ৩৮ একর ৭০ শতাংশ জমি পরবর্তী সময়ে আরএস খতিয়ান নং ৪১, অনামি প্রসাদ রায় চৌধুরীগং নামে ওই জমি রেকর্ড ভূক্ত হয়। অনামি প্রসাদ রায় চৌধুরীগং নামে কিভাবে রেকর্ড হয়েছে তার কোন তথ্য প্রমাণ নেই। এ জমি থেকে ২০০৯ সালে সিভিল অফিসার্স কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি নামে নামজারি জমাভাগ করা হয় ১৪ একর ৫০ শতাংশ। যার নথি নং ৩৫১৫/৮-৯, অনুমোদনের তারিখ ১৭/০৯/২০০৯, জোত নং ৬৪৫। তাছাড়াও ওই বছর সিভিল অফিসার্স কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি নামে ২০ বছরের খাজনাও জমা করা হয়েছে।
তৎকালীন উপ-সহকারী ভূমি অফিসার লাবিব উদ্দিন (বর্তমানে অবসর প্রাপ্ত), সহকারী ভূমি অফিসার আব্দুল লতিফ, গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চলতি দায়িত্ব প্রাপ্ত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) টিপু সুলতানসহ উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার, কানুনগোর যোগসাজশে ওই হাউজিং সোসাইটি এ জমি আত্মসাত করে।
অপর দিকে, গত ২০/০৬/২০১৩ খ্রিস্টাব্দে ওই দাগ খতিয়ান থেকে আরো ৮ একর জমির ৩৮ বছরের (বাংলা ১৩৭৯ থেকে ১৪১৭ সাল) ১০ লাখ টাকা খাজনা জমা করা হয়েছে। ওই খাজনা প্রদান করেছেন অনামি প্রসাদ রায় চৌধুরীগং-এর পক্ষে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ফাস্ট করপোরেশন প্রাইভেট লিঃ। এ জমির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা। এ জমি ওই প্রতিষ্ঠানটির নামে আত্মসাৎ জায়েজ করতে সরকারের কোষাগারে এ বিপুল পরিমাণ টাকা জমা করা হয়েছে। এ খাজনার চেক কেটেছেন তৎকালীন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান চৌধুরী।
১নং খাস খতিয়ান ও বনের গেজেটভূক্ত সরকারি জমির নামজারী জমাভাগ ও খাজনা গ্রহণ করা সরকারি নিয়ম বহির্ভূত। এ অনিয়মের জন্য বর্তমানে মিজানুর রহমান চৌধুরী সাময়িক বরখাস্তে রয়েছেন। অপর দিকে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ গাজীপুর পৌর ভূমি অফিসে দায়িত্ব পালনকালে একটি অর্পিত সম্পত্তি নামজারী জমা ভাগে অনিয়মের কারণে গত বছর সাময়িক বরখাস্তে রয়েছেন। এ বিষয়ে আজ রাত ৮টা ২৬ মিনিট থেকে ৯টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের বক্তব্য নেয়ার জন্য সেলফোনে একাধিকবার রিং করা হলেও অপর প্রান্তে রিসিভ হয়নি।
একটি সূত্র জানায়, সম্পূর্ণ ব্যক্তি স্বার্থে মোট অংকের অর্থের বিনিময়ে সরকারের ২২ একর ৫০ শতাংশ জমি ওই দু’টি ভূমি খেকো প্রতিষ্ঠানের পেটে যায়।
অপর একটি সূত্র জানায়, বর্তমানে সরকারি এ জমি উদ্ধারে দখলকারী ও দখলে সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।