শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > সারাদেশ > গাজীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এনজিও নারীকর্মীর পঙ্গুত্বের আশংকা: কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ

গাজীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এনজিও নারীকর্মীর পঙ্গুত্বের আশংকা: কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ

শেয়ার করুন

কাপাসিয়া ব্যুরো ॥
গাজীপুর: গাজীপুরে ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এনজিওকর্মী শারমিন হোসাইন জাকিয়া (২৬) গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্বের আশংকায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। টিএমএসএস এনজিও’র আঞ্চলিক ম্যানেজার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার কর্মীর প্রতি চরম অবহেলা ও অন্যায়ের অভিযোগ করেছেন। মোটরসাইকেল চালক মোঃ রিফাত হোসেনের বিরুদ্ধে শারমিনের বড়ভাই মোঃ সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ৮ ফেব্রয়ারী শনিবার জয়দেবপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, গাজীপুরের জয়দেবপুরের ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকায় টিএমএসএস এনজিও’র আঞ্চলিক অফিসের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শারমিন হোসাইন জাকিয়া গত ৩ ফেব্রুয়ারি সকাল আটটার দিকে তার বাসা থেকে কর্মস্থলে যাবার পথে অফিসের সামনেই একটি দ্রুতগতির বেপরোয়া মোটরসাইকেল তার উপর উঠিয়ে দেয়। এতে সে কোমর, মাথা, হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে মারাত্বক ভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং সাথে থাকা ১৫ হাজার টাকা মূল্যের দুইটি মোবাইল সেট ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এসময় তার সাথে থাকা অপর সহকর্মী আরজুমান আরা ও উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। তার অবস্থার উন্নতি না হলে ৫দিন পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ডাক্তাররা তাকে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

শারমিনের বড়ভাই মামলার বাদী সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর মোটরসাইকেল চালক মোঃ রিফাত হোসেন (২২) পালিয়ে গেলে উত্তেজিত লোকজন তার ব্যবহৃত নম্বরবিহীন এ্যাপাসি আরটিআর মোটরসাইকেলটি আটক করে এনজিও অফিসে রাখে। রিফাত পাশ^বর্তী কালিয়াকৈর উপজেলার ঠেংগারবান দেওয়ান বাড়ির সানু দেওয়ানের পুত্র। দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মোটরসাইকেল চালক ও এনজিও অফিসের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ শারমিনের কোন খোঁজখবর করেননি। বরং শারমিনের পরিবারের সাথে কোন প্রকার সমঝোতা ছাড়াই গত ৬ ফেব্রুয়ারি টিএমএসএস’র এরিয়া ম্যানেজার মোঃ রফিকুল ইসলাম আটককৃত মোটরসাইকেলটি রিফাতকে ফিরিয়ে দেয়। অথচ কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় জখমপ্রাপ্ত শারমিনের পক্ষে আইনগত পদক্ষেপ ও আর্থিক সহযোগিতা করা খুবই জরুরী ছিল। বাদী এনজিও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তাদের কর্মীর প্রতি চরম অবহেলার অভিযোগ করেছেন।

শারমিন হোসাইন জাকিয়া শেরপুর সদরের কসবা কাচারী পাড়ার মোঃ আবুল হোসেন ওরফে আবু জালেমের কন্যা। সে র্দীঘ প্রায় ৫ বছর যাবত টিএমএসএস এনজিওতে চাকুরী করছেন। গত ৫ মাস আগে তাদের মাওনা অফিস থেকে মির্জাপুর এলাকায় বদলী হয়ে এসেছে। পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতার অভাবে চাকুরীর পাশাপাশি সে পড়ালেখা করছে। বর্তমানে সে ময়মনসিংহ আনন্দমোহন বিশ^বিদ্যালয় কলেজে রাস্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষে অধ্যয়ন করছে। অভাব অনটনের সংসারে শারমিন তার পড়ালেখার খরচ যোগাতেই চাকুরীতে এসেছে। কিন্ত তার প্রতি কর্মস্থলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবহেলায় সে হতাশ হয়ে পড়েছেন। এতো ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানো তার এই অস্বচ্ছল পরিবারের দ্বারা সম্ভব নয়। তাই এনজিও কর্মকর্তা ও মোটরসাইকেল চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।

এব্যাপারে জানতে চেয়ে ভাওয়াল মির্জাপুরে এনজিও টিএমএসএস’র এরিয়া ম্যানেজার মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে তার মুঠোফোনে (০১৭৪০৩৯৯২৬২) একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।