শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > সারাদেশ > গাজীপুরে মন্ত্রীর উপস্থিতিতে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি; পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ২০

গাজীপুরে মন্ত্রীর উপস্থিতিতে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি; পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ২০

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুর: গাজীপুরে মন্ত্রীর উপস্থিতিতে আওয়ামীলীগের জেলা শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির সভাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের হাতাহাতি হয়েছে। এসময় পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ করে উত্তেজিত কর্মীদের সরিয়ে দেয়। লাঠিচার্জে অন্তত ২০জন আহত হয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভাওয়াল রাজবাড়ি এলাকার দোকান পাট বন্ধ হয়ে যায়। উৎসুক জনতার মধ্যে দেখা দেয় আতঙ্ক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয় ও আশেপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা ছিল।
আওয়ামীলীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ অক্টোবর গাজীপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ওই কমিটিকে অগণতান্ত্রিক ও দলের গঠনতন্ত্র বিরোধী আখ্যা দিয়ে কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। গতকাল শনিবার বিকেলে ভাওয়াল রাজবাড়ি এলাকায় জেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রহমত আলী, সিমিন হোসেন রিমি, আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওফেল আহমেদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা অংশ নেয়। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হকের উপস্থিতিতে সভাচলাকালে সভাস্থলের বাইরে দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজন, হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ইকবাল হোসেন সবুজ গ্রুপের নেতাকর্মীদের সাথে অ্যাডভোকেট জামিল হাসান দুর্জয়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে বেধড়ক লাঠিচার্জ করে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় পুলিশের লাঠিচার্জ ও হুড়োহুড়িতে অন্তত ২০জন নেতাকর্মী আহত হন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা ছিল।
গাজীপুর সদর উপজেলার সাবেক ভাওয়াল মির্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি গাজীপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে জেলা আওয়ামীলীগ, যা ছিল সম্পূর্ণ দলীয় গঠণতন্ত্রের পরিপন্থী। শনিবার বিকেলে জেলা আওয়ামীলীগের কাযালয়ে কাযনির্বাহী কমিটির পূর্বনির্ধারিত সভা চলছিল। ওই সভায় আমরা সদর উপজেলা কমিটি বাতিলের দাবি জানাতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে একত্রিত হচ্ছিলাম। এসময় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজের নেতা-কর্মীরা তাদের বাধা দেয়। এক পযায়ে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলীয় নেতাকর্মীরা জানায়, গাজীপুর -৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রহমত আলীর ছেলে জামিল হাসান দুর্জয়ের সাথে জেলা আওয়ামলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজের জেলা কমিটিসহ একাধিক বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। সম্প্রতি ইকবাল হোসেন সবুজ সদর উপজেলা আওয়ামলীগের কমিটি গঠন করেন। এতে জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মোশারফ হোসেন দুলালকে সভাপতি ও বাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ঘোষিত ওই কমিটিকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি করছে দুর্জয়ের সমর্থক নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই জেলায় উত্তেজনা সৃষ্টি করছিল।