এম.আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুর মহানগরের রাজবাড়ি রোড মানিক ভবনের তৃতীয় তলায় কেয়ার এন্ড কিউর হাসপাতাল এন্ড ডায়গনষ্টিক সেন্টারে ভূল চিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় দফায় দফায় চলছে সালিশ বৈঠক। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত কেয়ার এন্ড কিউর হাসপাতাল এন্ড ডায়গনষ্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ লাশ ফেলে রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়, তবে নবজাতক পুত্র সন্তানটি সুস্থ্য রয়েছে।
জানাযায়, গাজীপুর মহানগর কাজিবাড়ি এলাকার বিল্লাল হোসেনের পুত্র বধূ নিহত জাহানার আক্তার সুমি শ্রীপুর উপজেলার লোহাগাছিয়া গ্রামের জয়নাল বেপারীর কন্যা ও জরিপ হোসেনের স্ত্রী।
নিহতের স্বজনরা জানায়, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার সময় সিজার অপারেশনের মাধ্যমে প্রসূতি সুমি একটি পূত্র সন্তানের জন্ম দেয়। কিন্তু ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ভূল চিকিৎসায় রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় প্রেরণ করে। কেয়ার এন্ড কিউর হাসাপাতাল কর্তৃক অতি গোপনে মূমূর্ষু অবস্থায় রোগীকে এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় প্রেরণ করে। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ফেলে রেখে এ্যাম্বুলেন্সসহ স্টাফরা পালিয়ে যায়। সাবেক বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। গাজীপুর কেয়ার এন্ড কিউর হাসপাতাল এন্ড ডায়গনষ্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের ভূল চিকিৎসায় সুস্থ্য প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন নিহতের আত্বীয়স্বজন।
আরো জানা যায়, ক্লিনিকের শিশু ও গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. ফারজানা করিম সেতুর তত্ত্বাবধানে প্রসূতির চিকিৎসা সেবা নেয়ার কথা থাকলেও কোন অজ্ঞাত কারণে অনভিজ্ঞ চিকিৎসক নার্সদের ভুলের কারণে সুমির মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনা ধামা-চাপা দিতে ক্লিনিকের মালিক ডাক্তার মো: খলিলুর রহমান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর আজিজুল হাকিম নানা অপকৌশলে লিপ্ত থাকে।
তারা লোহাগাছিয়া গ্রামের ফকির খালেক সাইজির উঠানে মঙ্গলবার দিনব্যাপী স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গন্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ সামাজিতকভাবে ৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আপোস মিমাংসা করেন বলে আত্মীয়রা প্রহলাদপুর ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করেন। ইউপি চেয়ারম্যান তাদের অন্যায় ও অনৈতিক কর্মকান্ডকে সামাজিকভাবে স্বীকৃতির কারণে তিনি দ্বিমত পোষণ না করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তা ছাড়া কেয়ার এন্ড কিউর হাসপাতাল এন্ড ডায়গনষ্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুল হাকিম বলেন, জেলার কোন ক্লিনিকে পোষ্ট অপারেটিভ ব্যবস্থা, সিসিইউ, আই সিইউ নাই। উন্নত চিকিৎসার জন্যই রোগীকে জরুরী ভিত্তিতে ঢাকায় প্রেরণ করেছেন। এদিকে সুমিকে ঢাকায় প্রেরণের পর ক্লিনিকের কথিত ডাক্তার নার্স স্টাফরা অন্যান্য রোগীদের বের করে দিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে ক্লিনিক বন্ধ করে চলে যায়। গত বুধবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ঔ ক্লিনিকটি নিজেরাই তালাবন্ধ করে রাখে। শ্রীপুর থানার ওসি জাবেদুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাননি, পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।