শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শীর্ষ খবর > গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্পের কাজে অসাবধানতা বশত: গ্যাস লাইনে অগ্নিকান্ড

গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্পের কাজে অসাবধানতা বশত: গ্যাস লাইনে অগ্নিকান্ড

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
মহাসড়কের দু’ধারে বড় বড় গর্ত করে ড্রেন নির্মাণের কাজ চলমান থাকায় ওই সড়কে জমে থাকা কাদাঁ-পানিতে চলাচলে বেশ অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনকে। এছাড়া সব চেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে রাস্তার পাশে ছোট বড় শপিংমল, দোকান-পাটের সামনে বড় গর্ত করে দীর্ঘদিন ফেলে রাখা হচ্ছে। এতে কোন ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন দোকন বন্ধ রেখে ভাড়া গুনতে হচ্ছে। যেসব দোকান পাট কোন রকমে চালু রাখা হচ্ছে তাকে কাস্টমার না যাওয়াতে ব্যাপক ক্ষতি সম্মুখীন হচ্ছে দোকান মালিকরা। লাখ লাখ টাকা ইনভেস্ট করে এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

স্থানীয়দের কোন রকমের সুবিধা-অসুবিধা মানছে না ওই প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এছাড়া মাঝে মাঝে ওই মহাসড়কের লেগে যায় দীর্ঘ যান জট। এভাবে দীর্ঘদিন গর্তকরে ফেলে রাখাতে বা রাস্তায় কাঁদা-পানি জমে থাকাতে রাস্তাঘাটে চলাচলকারী সাধারণ জনগণসহ অফিস, স্কুল-কলেজে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীরা ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সাথে সাথে ঘটছে ছোট-বড় অনেক দুর্ঘটনাও। এর মধ্যে কোনটি প্রকাশ পায় আবার কোনটি পায় না।
এরকমই একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার দিনগত রাত সোয়া ১২টার দিকে। র‌্যাপিড বাস ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনভিজ্ঞ কর্মকর্তা বা লেবারদের অসাবধনাতায় কাজ করার সময় এক্সাভেটরের আঘাতে তিতাস গ্যাসের সরবরাহ লাইন ফুটো হয়ে গ্যাস বেরিয়ে অগ্নিকান্ডে সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে টঙ্গী ও জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা প্রায় দুই ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। পাশে থাকা নুপুর মার্কেট ও সোবহান মার্কেটের চারটি দোকান আগুনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিক মিজানুর রহমান ফারুকী জানান, মঙ্গলবার সারাদিন বিআরটি প্রকল্পের লোকজন বোর্ডবাজার আই.ইউ.টি গেইটের পূর্ব পাশে নুপুর মার্কেটের সামনে খোরা-খুরির কাজ করছিলো। এ সময় স্থানীয়রা কয়েকজন ওই স্থানে মাটির নিজে থাকা গ্যাস লাইনটি বন্ধ বা অন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে কাজ করতে বলে বিআরটি’র লোকদের। কিন্তু তারা বিষয়টি তিরস্কার করে বলে “সবাই এত বেশি বুঝলে তো কাজ করা যাবে না” কোন রকম বাধা না মেনেই কাজ করতে থাকে।

কাজের কোন এক সময় তিতাসের মেইন গ্যাসলাইন থেকে আবাসিক লাইনের পাইপটি চাপ লেগে লিগেজ হয়ে থাকে। কিন্তু দিনে আগুন ধরেনি। কিন্তু রাত সোয়া ১২টার দিকে গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই পাইপে আগুন ধরে যায়। মুর্হুতের মধ্যে আগুন পাশে থাকা নুপুর মার্কেট ও সোবাহান মার্কেটে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ওই মার্কেটের শিল্পি ফার্মেসী নামে ওষুধের দোকান, ভাই ভাই রেফ্রিজারেশন নামে ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান, মিম গ্লাস নামে একটি থাই গ্লাসের দোকান এবং ওই মার্কেটের দোতলায় জ্যাক বাংলাদেশ নামে একটি গার্মেটন্স মেশিন বিক্রির প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাসের লাইনে ফুটো হয়ে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডে পুড়ে গেছে।

র‌্যাপিড বাস ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ডে-শিফটের সুপার ভাইজার মো: জিহাদকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। রাতে সিফটে যারা কাজ করেছে তারা বলতে পারবে। এছাড়া তার কাছে বিআরটি অথবা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মোবাইল নাম্বার চাইলে তিনি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত গাজীপুর তিতাস গ্যাসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাউছার আলম প্রধান জানান, বুধবার সকালে গ্যাস লাইনে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পাইপটি সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। বড় গর্ত কাঁদা পানি থাকাতে পাইপটি খুজেঁ পাওয়া যাচ্ছে না। সনাক্ত করার পর জানা যাবে গ্যাস পাইপে কিভাবে আগুন লেগেছে।

জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা জাকারিয়া খান জানান, মঙ্গলবার মধ্যরাতে বোর্ডবাজার এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের কাজ করার সময় এক্সাভেটরের আঘাতে তিতাস গ্যাসের সরবরাহ লাইন ফুটো হয়ে গ্যাস বেরিয়ে এই অগ্নিকান্ডে সৃষ্টি হয়। এ সময় আগুনে পাশে থাকা একটি ওষুধের, একটি ফ্রিজের দোকান, থাই গ্লাসের দোকান ও দোতলায় জ্যাক বাংলাদেশ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে।

তিনি আরো জানান, এক্সাভেটর দিয়ে কাজ করার সময় তিতাস গ্যাসের সরবরাহ লাইনে আঘাতে স্পার্কিং হয় এবং গ্যাস লাইনের ফুটো হয়ে নির্গত গ্যাসে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো: মোমেনুল ইসলাম ঢাকায় মন্ত্রণালয়ের একটি সভায় অংশ নেয়ার কারণে ওই ব্যাপারে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন তিনি।