সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > গাজীপুরে গণগ্রেফতার বন্ধের দাবি বিএনপি প্রার্থীর

গাজীপুরে গণগ্রেফতার বন্ধের দাবি বিএনপি প্রার্থীর

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুর: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ পুরো নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময়ের পর রাত থেকেই পুলিশ বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার।

বৃহস্পতিবার সকালে তিনি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এ অভিযোগ করেন।

এ সময় তার সঙ্গে জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শিল্পপতি মো. সোহরাব উদ্দিন, জেলা হেফাজতের যুগ্ম সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিনসহ ২০ দলীয় জোট নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী মিডিয়া সেল প্রধান ডা. মাজহারুল আলম জানান, ঢাকা ও গাজীপুর গোয়েন্দা পুলিশ বুধবার রাতব্যাপী ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীদের বাসা বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় এিনপির ১০ জন গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী কর্মকর্তাকে আটক করে পুলিশ। আটকদের অধিকাংশকে রাতেই ঢাকা ও টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করেছে গাজীপুর জেলা পুলিশ।

বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে কাশিমপুর অঞ্চল নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব শাহীন, কেন্দ্র সচিব শাহজাহান ডিলারকে বুধবার রাতে গ্রেফতারের পর ঢাকা ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করে গাজীপুর জেলা পুলিশ। তাদেরকে রাতেই সাভার ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। অপরদিকে কোনাবাড়ি কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক স্থানীয় বিএনপি নেতা ডা. মিলন, কেন্দ্র আহ্বায়ক ছাত্রদল নেতা মিলন মিয়া ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য তাইজুল ইসলামকে বুধবার রাতে আটকের পর রাতেই টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

এছাড়া ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বালিয়ারা কেন্দ্র কমিটির সদস্য আব্দুস সামাদ, কাউলতিয়া অঞ্চল নির্বাচন পরিচালনা কেমিটির সদস্য শাহ আলম, টঙ্গীর মরকুনে ৪৭নং ওয়ার্ড নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আবু সায়েম, পূবাইল অঞ্চল নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের ইছালী গ্রামের আব্দুস সামাদকে গ্রেফতার করে ঢাকা ও গাজীপুর ডিবি পুলিশ।

মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, পোলিং এজেন্টরা যাতে কেন্দ্রে না যায় সেজন্য সাদা পোশাকে পুলিশ কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর অঞ্চলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে। পুলিশ নগরির প্রত্যন্ত কাশিমপুর ও কোনাবাড়ি অঞ্চলের কেন্দ্রগুলো দখলের নীল নকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ইতোপূর্বে কাশিমপুর অঞ্চলের ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সাবেক কাশিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন সরকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রিটার্নিং অফিসারের কাছে পুলিশি হয়রানির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও পুলিশি হয়রানি থামছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

হাসান উদ্দিন সরকার সুষ্ঠু, অবাদ ও নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার বন্ধ, গ্রেফতারদের মুক্তি ও পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি জানান।

অপরদিকে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মন্ডল বৃহস্পতিবার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তারা পুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা যদি সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন না করে তাহলে ১৯৯১ সালের আইন অনুসারে যেকোন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের যেন অন্যায় ভাবে হয়রানি না করা হয় সেজন্য তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ধরে রেখেছেন এবং ২৬ জুন পর্যন্ত এটি ধরে রাখতেও সক্ষম হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন।

তিনি জানান, বিএনপির প্রার্থীর কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা যেন বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে তাকে জানায়। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।