শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ : প্রধান বিচারপতি

গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ : প্রধান বিচারপতি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: বিচার বিভাগের যুগান্তকারী সংস্কার সাধনে আগামী দিনের পথ চলায় সংশ্লিষ্ট সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। বাংলাদেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে দেয়া এক বানীতে তিনি এই কামনা করেন।

মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে এই বাণী প্রকাশ করা হয়েছে। গত ১৬ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে এক বছর পূর্ণ করেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি বাণীতে সবাইকে পারস্পারিক সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বিচার অঙ্গনের গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সরকার, বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী জনগণ তথা দেশবাসীর পূর্ণ সহযোগিতা পেলে বিদ্যামন মামলাজট দ্রুত নিরসন সম্ভব হবে। স্বল্প খরচে স্বল্প সময়ে গুণগত বিচার পাওয়া সম্ভব হবে এবং এ দেশের বিচার ব্যবস্থা বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।’

বাণীতে তিনি আইন মন্ত্রী, আইনজীবী ও বিচার অঙ্গনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শুভেছা জানান। গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে এক বছরের দায়িত্ব পালন বিষয়ে উৎসাহ ব্যঞ্জক সংবাদ প্রকাশ করেছে।’ প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞতা জানানো সম্ভব নয় ও বিচারক হিসেবে কথা বলার পরিসরও সীমিত বিধায় তিনি বাণীর মাধ্যমে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

প্রধান বিচারপতি গত এক বছরে মামলা জট নিরসনে গৃহীত পদক্ষেপ, বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশন, মামলা ব্যবস্থাপনা, আদালত সংস্কার, বিচারকদের প্রশিক্ষণ, মামলা নিষ্পত্তির হার, দেশের আদালত সমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিভিন্ন আদালত পরিদর্শনের তথ্য বাণীতে তুলে ধরেন।

বানীতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের মামলাজট নিরসনকল্পে বিদ্যমান অবকাশকালীন ছুটি কমিয়ে আনা ও যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তিকৃত মামলার রায় লেখা নিশ্চিত করার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করা স্বত্ত্বেও সহকর্মী সকল বিচারপতিদের এ বিষয়ে সম্মত করতে সমর্থ হইনি এটা আমার ব্যর্থতা। কোনো কোনো বিচারক রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন, আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থি।’

বাণীতে তিনি আরো বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ বাংলাদেশের সংবিধান, আইনের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ গ্রহণ করেন। কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না। আদালতের নথি সরকারি দলিল। একজন বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর আদালতের নথি নিজের নিকট সংরক্ষণ, পর্যালোচনা বা রায় প্রতি করা এবং তাতে দস্তখত করার অধিকার হারান। আশা করি বিচারকগণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এমন বেআইনি কাজ থেকে বিরত থাকবেন।’

প্রধান বিচারপতি বানীতে গণমাধ্যমে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘বিচার বিভাগ আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে। এবং গণমাধ্যম সেই বার্তা বৃহত্তর জনগোষ্ঠির দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। এ দেশে গণমাধ্যম সেই দায়বদ্ধতা থেকে পূর্বাপর বিচার বিভাগ ও বিচারপ্রার্থী জনগণের আশা আকাঙ্খা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি এবং লক্ষ ও উদ্দেশ্য ইত্যাদি বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন করার গুরুদায়িত্ব পালন করে আসছে। বিগত এক বছর গণমাধ্যম বিচার বিভাগের বিভিন্ন কার্যক্রম বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করায় তাদের অবদান বিশেষভাবে স্মরণ করছি।’