সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > খুনি শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা হবে

খুনি শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা হবে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সরকার গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দল গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। যদিও এই নৃশংস ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি নূর হোসেনসহ এজাহারভুক্ত একজনকেও এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। ঘটনার ১১ দিন পার হলেও লোমহর্ষকএই হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট খোলেনি। ইতিমধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে নূর হোসেনের বাড়ি থেকে রক্তমাখা গাড়ি উদ্ধার করেছে। সেখানে পাওয়া গেছে কিছু লাঠিসোটাসহ আরও কিছু আলামত। নিহতদের জামা-কাপড় থেকেও আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা এসব আলামত পরীক্ষার জন্য পুলিশের বিশেষ অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহায়তা চেয়েছেন। সিআইডি থেকে মতামত দেওয়া হয়, রক্তমাখা আলামতসহ অন্যান্য নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করা যেতে পারে। এই পরীক্ষা ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক ল্যাবে সম্পাদন হবে। সিআইডির এমন মতামতের পর আদালতের অনুমতি নিয়ে নারায়ণগঞ্জের এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আলামতের ডিএনএ পরীক্ষা করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আলামতে কোনো খুনির ছাপ পাওয়া গেলে এই পরীক্ষার মাধ্যমে তা নির্ণয় সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে সাতজনকে তুলে নিয়ে হত্যাকাে র ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত প্রশাসনিক কমিটির সদস্যরা নারায়ণগঞ্জে ঘটনাস্থলে যান। এ ছাড়া সাত খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে গতকাল নরসিংদী থেকে নূর হোসেনের দেহরক্ষীর স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল নারায়ণগঞ্জ জেলার ৮৫ পুলিশ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করা হয়েছে।দায়িত্বশীল সূত্র সমকালকে জানায়, র্যা বের তদন্ত কমিটির সদস্যরা সাবেক তিন সেনা কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। কমিটির সদস্যরা প্রাথমিকভাবে ফোনে যোগাযোগ করে বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চান। পরে প্রয়োজনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে বলে জানা গেছে।খুনি শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা হবে
সূত্র বলেছে, নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় নূর হোসেন ও র্যা ব সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বাইরে তদন্ত কমিটি এখনও নতুন কোনো ক্লু পায়নি। এর বাইরে অন্য কোনো গোষ্ঠীর চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো আলামত তদন্ত কমিটির কাছে নেই।পুলিশ মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার সমকালকে বলেন, নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সিআইডির ওপর অর্পিত দায়িত্ব তারা সুচারুভাবে পালন করবেন। প্রযুক্তিনির্ভর তদন্তকে পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় হবে না।

সিআইডির ডিআইজি (ফরেনসিক) রওশন আরা বেগম সমকালকে বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় উদ্ধার করা আলামতের পরীক্ষা যথানিয়মেই সম্পন্ন হবে।র্যা বের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান সমকালকে বলেন, র্যা ব সদস্যদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা তদন্তে একাধিক কমিটি কাজ করছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এই ঘটনাকে কোনো গোষ্ঠী ভিন্ন খাতে নিতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়। নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করে আসছেন, ছয় কোটি টাকার বিনিময়ে র্যা ব-১১-এর সদ্য সাবেক সিও লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ ও লে. কমান্ডার এমএম রানা অপহরণ ও হত্যায় সহায়তা করেন। এমন অভিযোগের পর সেনাবাহিনী ত্বরিত ব্যবস্থা হিসেবে গত সোমবার রাতে লে. কর্নেল তারেক ও মেজর আরিফকে অকালীন অবসর (প্রি-ম্যাচিউরড রিটায়ারমেন্ট) ও নৌবাহিনীর লে. কমান্ডার এমএম রানাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। এর আগে নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় র্যা ব-১১-এর তিন কর্মকর্তা, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসকসহ বেশ কয়েকজনকে প্রত্যাহার করা হয়।র্যােবের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু, ঘটনাস্থলে তদন্ত দলের সদস্যরা : সাতজনকে তুলে নিয়ে হত্যাকাে র ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত প্রশাসনিক কমিটির সদস্যরা গতকাল নারায়ণগঞ্জে যান। কমিটির প্রধান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহজাহান আলী মোল্লাসহ অন্য সদস্যরা বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে প্রথমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। তদন্ত দলের সদস্যরা জিয়াছমিন বেগম নামে এক নারীর বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন। ওই নারীই গত ৩০ এপ্রিল নদীতে প্রথম লাশ ভাসতে দেখেছিলেন। শাহজাহান আলী মোল্লা বলেছেন, তারা সাত দিনের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতকে দেবেন। নারায়ণগঞ্জের হত্যাকাাে তদন্তে সরকারকে একটি কমিটি গঠন করতে বলেন। ওই আদেশ অনুসারে বুধবার কমিটি গঠন করা হয়। গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জ রওনা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শাহজাহান আলী মোল্লা। তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের যে স্থানে লাশ পাওয়া গেছে, সে স্থান পরিদর্শন করা হবে। শনিবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হবে।’

এই হত্যাকাে র্যা বের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এবং এতে আইন-শৃঙ্খলা বা প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তার গাফিলতি ছিল কি-না, তা খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। মূল তদন্ত প্রতিবেদন কতদিনের মধ্যে দেওয়া হবেথ জানতে চাইলে শাহজাহান আলী মোল্লা বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা দেওয়া হবে।’তদন্তে কোন বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হবেথ সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কর্মপরিধিতে যা আছে তার মধ্যে থেকেই তদন্ত করা হবে হাইকোর্টের নির্দেশনায়।’হাইকোর্ট তদন্তের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে প্রশাসনের কোনো সদস্য বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা ও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি-না, তা উদ্ঘাটন করতে বলেছেন। অপহরণের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অপহৃত ব্যক্তিদের জীবিত উদ্ধারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো অবহেলা বা ইচ্ছাকৃত গাফিলতি ছিল কি-না, তাও খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে। তদন্ত দল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সম্ভাব্য যে স্থান থেকে সাতজনকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে তাদের পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে, সে স্থান পরিদর্শন করে। শীতলক্ষ্যার তীরে লাশ উদ্ধারের ঘটনাস্থলেও যান তারা।

‘চাপ উপেক্ষা করে তদন্ত করব’ নারায়ণগঞ্জের অপহরণ ও সাত খুনের ঘটনা সব চাপ উপেক্ষা করে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করবে তদন্ত কমিটি। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে যা করা দরকার তা-ই করা হবে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সাত খুনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাজাহান আলী মোল্লা। এ সময় কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আবদুল কাইয়ুম সরকার, আবুল কাসেম মো. মহিউদ্দিন, আইন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. মিজানুর রহমান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. শফিকুর রহমান ও সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর। এর আগে দুপুুরে সচিবালয়ে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন কমিটির সদস্যরা।তদন্ত কমিটির প্রধান সাংবাদিকদের জানান, ‘নারায়ণগঞ্জের যে স্থান থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, আমরা সেই স্থান পরিদর্শন করব। শনিবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বজনহারাদের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। অভিযোগ উত্থাপনকারী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গেও আমরা কথা বলব। ভিকটিমদের বক্তব্যসহ সবকিছুকেই গুরুত্ব দেব।’

নূর হোসেনের দেহরক্ষীর স্ত্রীসহ তিনজন গ্রেফতার :নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নূর হোসেনের দেহরক্ষীর স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেনথ নূর হোসেনের দেহরক্ষী শাহজাহানের স্ত্রী মোমেনা আক্তার, শ্যালক মিন্টু ও টিপু। এর আগে এ মামলায় আরও ১৬ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনোয়ারা বেগমের আদালতে পাঠালে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।অপরদিকে ঘটনার ১২ দিন পর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের জামাতা ডা. বিজয় কুমার বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের নামে ফতুল্লা মডেল থানায় বৃহস্পতিবার সকালে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

তদন্তের প্রয়োজনে যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ :নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেছেন, ‘সেভেন মার্ডারের তদন্তে প্রয়োজনে যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দরকার হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যে কোনো ব্যক্তিকে আটক করা হবে। এ মামলার তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি আছে। তবে শেষ কথা বলার সময় এখনও আসেনি। গতকাল দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ড. মহিদ বলেন, ‘একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের রহস্য সাধারণ কোনো হত্যাকাণ্ডের মতো এত তাড়াতাড়ি পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের পর যাতে তদন্তে কোনো সূত্র না পাওয়া যায়, সে পরিকল্পনাও হত্যাকারীরা করে। এ কারণেই ধৈর্য ধরে সময় নিয়ে তদন্ত করতে হয়।’সাত খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত র্যা ব কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মহিদ বলেন, ‘তদন্তের দুটি অংশ থাকে। একটি দৃশ্যমান, যাতে খুব কম তথ্যই আপনাদের দিতে পারি। আরেকটি অংশ হচ্ছে অদৃশ্য। কাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, কাকে করব এর সবকিছু জানানো হয় না। তবে সামনের দিনেই আপনারা দেখতে পারবেন কাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কারণ কাউকে গোপনে জিজ্ঞাসাবাদ করব না।’ চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদল সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, ‘মামুনুর রশীদ মণ্ডল এর আগে নরসিংদীর লোকমান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন। মূলত ওই তদন্ত আমিই করেছিলাম। মামুনুর রশীদ সেটা কম্পাইল করেছিলেন। সে সময় তিনি আমার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাই তাকে নারায়ণগঞ্জে বদলি করে সেভেন মার্ডার মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই মামলাও আমিই তদন্ত করব। সঙ্গে তার সহযোগিতা নেব। তাই তাকে জেলা ডিবির ওসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ পুলিশের অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, উদ্ধার করা আলামতের মধ্যে ইট, রেশনের বস্তা, রশিসহ আরও কিছু নমুনা পরীক্ষা করা হবে। হত্যার পর নদীতে ডুবিয়ে দিতে খুনিদের ব্যবহৃত ইট ও রেশনের বস্তা কোথা থেকে এসেছে, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। বেঙ্গলিনিউজটোয়েন্টিফোর.কম