শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শীর্ষ খবর > খালেদা জিয়াকে নির্জন কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে: ফখরুল

খালেদা জিয়াকে নির্জন কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে: ফখরুল

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বিএনপির চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে একটি নির্জন কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।এটা কি তার প্রাপ্য? তিনি জামিন পেয়েছেন অথচ তাকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না।

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে ‘আওয়াজ’ নামে এক সংগঠন আয়োজিত ‘সহিংসতা ও নারী: বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে দায়ের হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৯৮ হাজার মামলা করা হয়েছে।এগুলোতে ২৭ লাখকে আসামি করা হয়েছে।

দেশে ফ্যাসিস্ট শাসন চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কোনো দেশে ফ্যাসিবাদ যখন চলে তার সর্বপ্রথম কাজ একটা ভয়ের সৃষ্টি করা, ত্রাস সৃষ্টি করা, জনগণের মধ্যে একটা ভীতি ছড়িয়ে দেয়া। এই ভীতিতে বাস-রেস্টুরেন্টে কেউ কথা বলতে চান না। সরকারের-আওয়ামী লীগের সফলতা এই জায়গায়, তারা একটি ভয়ভীতি ছড়িয়ে দিয়েছে। ফলে এখন আর কেউ কথাই বলতে চায় না।

আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মত গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যে দলটি গণতন্ত্রের কথা বলেছে, সংগ্রাম করেছে, সেই দলটি আজকে আবার দ্বিতীয়বারের মতো গণতন্ত্রকে হত্যা করল। প্রথমবার করেছে ১৯৭৫ সালে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। আজকে আবার এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করল।’

৩০ ডিসেম্বর ভোটের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে ইকোনোমিস্টের মতো পত্রিকা ক্যাপশন করছে, গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ গোটা পৃথিবীর মিডিয়া জানে যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে।

আওয়ামী লীগ ছলে বলে কৌশলে দেশ ধ্বংস করে দিচ্ছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সবাই জানি গত এক বছর ধরে বাংলাদেশে একটি দলের শাসন চলছে। তারা ছলে বলে কৌশলে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রকে পুরোপুরিভাবে ধংস করে দেয়ার উপক্রম করেছে। গত নির্বাচনে দেখলাম অত্যন্ত সচেতনভাবে তাদের ক্ষমতায় নেয়ার জন্য রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করেছে। এর চেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার আর কিছু হতে পারে না।

ঐক্যফ্রন্টের ভাঙন নিয়ে মিডিয়ার সংবাদ প্রচারের সমালোচনা করে ফ্রন্টের মুখপাত্র ফখরুল বলেন, আজকে কিছু পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনের টকশোগুলোতে তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা বিএনপি আর ঐক্যফ্রন্টের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়ান। অথচ আওয়ামী লীগ যে ইচ্ছাকৃতভাবে রাষ্ট্রকে ধংস করে দিলো, সংবিধানকে লংঘন করলো সে বিষয়গুলো বলার সাহস তারা পান না।

বিএনপিতে কোনো সংকট নেই দাবি করে দলটির মহাসচিব বলেন, সমস্যা-সংকট আজকে গোটা জাতির, সমস্যা বিএনপির নয়। আজকে দেশ ধংস হয়ে যাচ্ছে, জাতি ধংস হয়ে যাচ্ছে। সব অধিকার ধংস হয়ে যাচ্ছে, আর আপনারা বলছেন—বিএনপির সমস্যা। বিএনপির কোনো সমস্যা নাই।

দেশ ও জাতিকে বাঁচানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে দেশে জনগণের কোনো নিরাপত্তা নেই, যে দেশে সংবিধানসম্মত একটি নির্বাচন করতে গিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে দখল করে নেয়া হয়, সেখানে নারী নির্যাতনের মতো বিষয়গুলোর বিচার পাওয়া যাবে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সংসদ চলছে, এই সংসদ কার কথা বলবে? এই সংসদ কি নারীদের ওপর যে নির্যাতন হচ্ছে সে বিষয়ে কথা বলবে? বলবে না, কারণ হচ্ছে তাদের লোকেরাই এই কাজগুলো করছে।

একাদশ সংসদের বৈধতা নেই দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের এই সংসদ বসানোর নৈতিক কোনো বৈধতা নেই। কারণ তারা নির্বাচিত নয়। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের নামে গোটা জাতির সঙ্গে নিষ্ঠুর প্রহসন-তামাশা করা হয়েছে।

জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব অন্যায়ের প্রতিবাদ করা হবে জানিয়ে ফখরুল বলেন, আজকে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। ন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কাছ থেকে চিরদিনের জন্য চলে গেছে। সুতরাং এখন সাহস নিয়ে লড়াই করতে হবে।আপনারা ভয় পাবেন না। সারাদেশের মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রফেসর সাহিদা রফিক। বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী, প্রফেসর ড. তাজমেরী এস ইসলাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম প্রমুখ।