স্টাফ রিপোর্টার ॥ এতদিন বিএনপির নেতাদের দেখা যায়নি। গত শুক্রবার থেকে টানা পাঁচদিন তারা ছিলেন আত্মগোপনে। কারণ, ওইদিন দলটির পাঁচ নেতা গ্রেফতার হন। আর চেয়ারপারসনের বাসভবনের সামনে মোতায়েন হয় অতিরিক্ত পুলিশ-র্যাব। টানা পাঁচদিন বাসাতেই থাকেন বেগম খালেদা জিয়া।
পাঁচদিন পর তিনি বাসা থেকে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যাওয়ার পর সেখানে নেতাদের হিড়িক পড়ে। অথচ এ ক’দিন দলের শীর্ষ থেকে শুরু করে মধ্যম সারির নেতারা চেয়ারপারসনের কার্যাঁলয় তো দূরের কথা, ছিলেন লোকচক্ষুর আড়ালে। এমনকি হরতালেও তাদের কাউকে রাজধানীর কোথাও মাঠে দেখা যায়নি।
তবে রাত সোয়া আটটার দিকে পাল্টে গেল দৃশ্য। সেই সময় যখন খালেদা জিয়া কার্যালয়ে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে একে একে আসতে থাকেন নেতারা।
শুক্রবার হরতাল ঘোষণার পর গুলশান কার্যালয়সহ চেয়ারপারসনের বাসভবনের চারপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন হয়। এ কয়েকদিন তিনি বাসায় একরকম অবরুদ্ধ ছিলেন বলে দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। ওই দিন গ্রেফতার হন স্থায়ী কমিটির তিন সদস্যসহ বিএনপির পাঁচ নেতা। তাদের গ্রেফতার হওয়ার পর গত কয়েক দিন দলের নেতারা গুলশান কার্যালয়ে যাননি গ্রেফতারের ভয়ে।
তবে টানা ৮৪ ঘণ্টার হরতাল শেষে খালেদা জিয়া কার্যালয়ে যেতে পারেন, এই খবরে বুধবার বিকেল থেকেই অনেক নেতা গুলশানের আশপাশে অবস্থান নেন। সন্ধ্যার পর কেউ কেউ বিএনপি প্রধানের কার্যারলয়ে ঢুকেও পড়েন। তবে রাত সোয়া আটটার দিকে খালেদা জিয়া যখন কার্য্লায়ের ভেতরে প্রবেশ করেন, তখন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন সারির অনেক নেতা তার সঙ্গে সেখানে ঢুকে পড়েন।
খালেদা জিয়া কার্যালয়ে যাওয়ার আগে সম্মিলিত পেশাজীবী ফোরামের ২০ জনের মতো নেতা তার সঙ্গে মতবিনিময় করতে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরাও আসেন দলীয় প্রধানের সঙ্গে দেখা করতে।
এ ছাড়া খালেদা জিয়া কার্যালয়ে আসার ১০ মিনিট পরে এখানে আসেন সাংবাদিক শফিক রেহমান।
রাত নয়টা ২০ মিনিটে কার্যালয়ে আসেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে কার্যালয়ে আসেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, তিন মহিলা সাংসদ রাশেদা বেগম হীরা, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মি আখতার, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধের প্রজন্মের সভানেত্রী শ্যামা ওবায়েদসহ অঙ্গসংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল অব. মাহবুবুর রহমান এসে কিছুক্ষণ অবস্থান করে চলে যান। তিনি চলে যাওয়ার পর কার্যালয়ে আসেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ।
চেয়ারপারসনের এই কার্যালয় ঘিরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। খালেদা জিয়া এখানে আসার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়েছে। পুলিশের সাদা পোশাকের সদস্যরাও ঘুরে বেড়াচ্ছেন।