শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > ‘ক্ষরস্রোতা শীতলক্ষ্যা ও ব্রহ্মপুত্র আজ বরই নিস্প্রাণ, পানি নেই আছে সবুজের সমারোহ’

‘ক্ষরস্রোতা শীতলক্ষ্যা ও ব্রহ্মপুত্র আজ বরই নিস্প্রাণ, পানি নেই আছে সবুজের সমারোহ’

শেয়ার করুন

আকরাম হোসেন রিপন
স্টাফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুর: কাপাসিয়া উপজেলার ক্ষরস্রোতা শীতলক্ষ্যা ও ব্রহ্মপুত্র আজ বরই নি¯প্রাণ। এক সময়ের শীতলক্ষ্যায় পালতুলা নৌকা রসি (গুন) টেনে এক শহর থেকে অন্য শহরে নিয়ে যাওয়া, মাঝি মাল্লার ভাটিয়ালী গান, নৌকা শ্রোতের টানে ভেসে যাওয়া, স্ত্রীর তার স্বামীর জন্য অপেক্ষা, মার অপেক্ষা… কবে ফিরবে তার সন্তান, গঞ্জে যাওয়া নৌকা আবার ফিরবে কবে ঘাটে। আজ এগুলো শুধুই রুপকথা। এই বাস্তবতা বর্তমান প্রজন্মের কাছে অবিশ্বাস্য। পানি শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে দুটি নদীরই বেশীর ভাগ অংশ। শীতলক্ষ্যার বুকে জেগে উঠেছে বড় বড় চর আর ব্রহ্মপুত্রের বুকে সবুজের সমারোহ।


ব্রহ্মপুত্রের বেশিরভাগ স্থানে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকগণ সেচ দিয়ে করছে ধানের আবাদ। কোথাও কোথাও ফেটে চৌচির নদীর বুক। দেখে বোঝার উপায় নেই এখানে একদা কোন নদের প্রবাহ ছিল। উৎসমুখ থেকে নামকা বারওয়ার কাছে হিমালয় অঞ্চলে প্রবেশ মুখ পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদীটির দৈর্ঘ্য ১৬ শত কিলোমিটার। আসামে বন্দুর উপত্যকায় ৭২০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে এটি পুরুপাহাড় ঘুরে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। গঙ্গা ও দক্ষিণে সাগরে মিলিত হবার পূর্ব পর্যন্ত দক্ষিণমুখী প্রবাহের দৈর্ঘ্য ২৪০ কিলোমিটার। বাংলাদেশে এর প্রবাহ পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত। ১৭৮৫ খ্রীঃ তেরি রেনেলের মানচিত্র এভাবেই নদীটির গতিপথ নির্দেশিত হয়েছিল।
এলাকাবাসী জানায়, নদীগুলো পরিকল্পিত উপায়ে খনন না করলে এলাকায় নদী বলতে কোন শব্দের অস্তিত্ব থাকবে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে নদীর গল্প শোনালেও তারা তা খুঁজে পাবে না। সরকার আইন প্রনয়ণের মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদী রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
নদীপথে ব্যবসায়ীরা জানায়, এক সময় এখানে নদী দিয়ে দুরদুরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা নৌকা ট্রলার যোগে মালামাল পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় করতে আসত, বর্তমানে নদী ভরাটের কারণে তারা আসতে পারছেনা। যে ভাবে দেশের নদীগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে এ থেকে উত্তরণের উপায় বের না করলে নদী মাতৃক এদেশের নদীর ঐতিহ্য বিলীন হয়ে যাবে। বিশেষ করে উপজেলার শীতলক্ষ্যা ও ব্রহ্মপুত্র নদী খননের ব্যবস্থার মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে কাপাসিয়াবাসী কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছে।