আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
অবশেষে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘বুকে শেষ ছুরি বসাল’ সৌদি আরবের মিত্ররাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র। সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যায় সৌদি ক্রাউন প্রিন্সই নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। আর এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সহায়ক ছিলেন যুবরাজের ভাই যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালেদ বিন সালমান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইএ ঘনিষ্ঠ এক মার্কিন কর্মকর্তা শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে সিআইএ এ বিষয়ে তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদন কংগ্রেসে পাঠিয়েছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
সৌদি সরকারের দাবি, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যুবরাজ কিছুই জানেন না। সর্বপ্রথম ওয়াশিংটন পোস্টে সিআইএ’র এ অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। খাসোগি ওয়াশিংটন পোস্টের নিবন্ধ সম্পাদক ছিলেন। ওই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, খাসোগি হত্যকাণ্ড বিষয়ে প্রিন্স খালেদের ফোনালাপ নিয়ে তদন্তের ভিত্তিতে সিআইএ তাদের মূল্যায়ন জানিয়েছে। প্রিন্স খালেদই খাসোগিকে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট থেকে তার দরকারি কাগজপত্র সংগ্রহ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি খাসোগিকে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে কোনো বিপদ না হওয়ার নিশ্চয়তাও দিয়েছিলেন।
সিআইএর মূল্যায়নকে ‘অতিরঞ্জিত’ বলে দাবি করেছে ওয়াশিংটনে সৌদি দূতাবাস। দূতাবাসের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অতিরঞ্জিত এই মূল্যায়নে যে দাবি করা হচ্ছে তা মিথ্যা।’
গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে খুন হন খাসোগি। সৌদি আরব এ হত্যার কথা স্বীকার করেছে। যদিও খাসোগির মৃতদেহ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সৌদি আরবও কিছু বলছে না। খাসোগি হত্যায় জড়িত সন্দেহে ১৮ সৌদি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে নরহত্যার অভিযোগ এনে মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন সৌদি প্রসিকিউটর।
এক মিসরীয় নারীকে বিয়ে করেছিলেন খাসোগি : এক মিসরীয় নারী দাবি করেছেন, হত্যার কয়েক মাস আগেই তাকে বিয়ে করেছিলেন খাসোগি। গত জুনে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে খাসোগিকে বিয়ে করেছেন বলে উল্লেখ করেন ওই নারী।
এক সাক্ষাৎকারে নিজেকে খাসোগির স্ত্রী দাবি করে ওই মিসরীয় বলেন, একজন মুসলিম নারী হিসেবে নিজের পূর্ণ অধিকার এবং স্বীকৃতি পেতে খাসোগির সঙ্গে তার সম্পর্ক তিনি প্রকাশ করতে চান। নিজের নিরাপত্তা ও চাকরির খাতিরে ওই নারী তার পরিচয় প্রকাশ করেননি। তবে তিনি তার নামের প্রথম ও শেষ অংশ এইচ. এটিআর বলে উল্লেখ করেছেন।
ওয়াশিংটন পোস্টের সঙ্গে ক্ষুদেবার্তায় ওই নারী জানান, গত জুনে ওয়াশিংটনে তাদের বিয়ে হয়। তাদের বিয়ের ছবিও তার কাছে আছে।
খাসোগির দীর্ঘদিনের এক সহযোগীও এ বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বিয়েতে সাক্ষী ছিলেন। তবে তিনিও নিরাপত্তার খাতিরে নিজের নাম প্রকাশ করেননি।
তুর্কি বাগদত্তা হেতিস চেঙ্গিস টেলিফোনে বলেন, ‘ওই নারীর সঙ্গে খাসোগির সম্পর্কের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।’ ওই নারীর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে হেতিস বলেন, ‘আমার সন্দেহ হচ্ছে যে, জামালের সুনাম নষ্ট করতে ও তাকে অসম্মান করতেই এ ধরনের প্রচেষ্টা চলছে।’