কৃষকের পছন্দ দানাদার ইউরিয়া প্রয়োগযন্ত্র

মোঃ কামরুজ্জামান মিলন ॥ দানা অথবা গুটি যে আকারেই ইউরিয়া সার মাটির নীচে প্রয়োগ করা হোকনা কেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুটির ভাগ্যই একই রকম। অর্থাৎ মাটিতে প্রয়োগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উভয়ই মাটির রসের সাথে মিশে জলীয় আকার ধারণ করে। কিন্তু কোন ভাবে মাটির নীচে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা গেলে অর্থাৎ সার প্রয়োগের পর মাটি দ্বারা সঠিক ভাবে ঢেকে দিতে পারলে সারের কার্যকারিতা বাড়ানো সম্ভব।এতেকরে গুটি বা দানাদার যেকোনো আকারেই করা যেতে পারে।
হাতদ্বারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে গুটি ইউরিয়া কার্যকর হলেও যন্ত্রদ্বারা অর্থাৎ গুটি ইউরিয়া প্রয়োগযন্ত্র দ্বারা মাঠে গুটি প্রয়োগ অত্যান্ত কষ্টকর ব্যাপার। এখানে ধানের চারার ঠিক চার গোছার মাঝখানে যন্ত্রের সাহায্যে গুটি প্রয়োগ অনেকটাই কঠিন কাজ। একটু এলোমেলো হলে সঠিক ফলাফল দেয়না। অধিকন্তু, কোন কারণে যন্ত্র দ্বারা একটি গুটি কোন সময় না পড়লে ফসলের মাঠের অনেক খানি জায়গা জুড়ে তার প্রভাব দেখা যায়। তাছাড়া গুটি ইউরিয়াও সহজপ্রাপ্য নয়। দাম কিছুটা বেশী। এই সকল সমস্যার কারণে গুটি ইউরিয়া প্রয়োগযন্ত্রটি কৃষকের মাঝে অতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি।
কিন্ত গুটি ইউরিয়ার মতো দানাদার ইউরিয়াও মাটির নীচে প্রয়োগ করে ঢেকে দিতে পারলে গুটি ইউরিয়ার মতোই ফলাফল পাওয়া যায়। সে ধারনা থেকেই ইউরিয়া সারের অপচয় রোধ করার জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনইষ্টিটিউট (ব্রি) এর ফার্ম মেশিনারি এন্ড পোস্টহারভেস্ট টেকনোলোজি বিভাগ উদ্ভাবন করেছেন ব্রি দানাদার ইউরিয়া প্রয়োগযন্ত্র। যন্ত্রটি দ্বারা ৬-৮ সেঃ মিঃ কাঁদা মাটির গভীরে দানাদার ইউরিয়া সার স্থাপন করা যায়।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষকের মাঠে যন্ত্রটি দ্বারা প্রয়োগিক গবেষণা করে দেখা গেছে প্রচলিত পদ্ধতিতে যেখানে বিঘা প্রতি ৩ বারে ৩৫-৪০ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োজন হয়, সেখানে যন্ত্রটি দ্বারা মাত্র ১ বারে ২২-২৪ কেজি সার প্রয়োাগ করলেই যথেষ্ট অর্থাৎ প্রচলিত পদ্ধতি তুলনায় ২০-৩০ ভাগ ইউরিয়া সার সাশ্রয় করা সম্ভব। গুটি ইউরিয়া প্রয়োগযন্ত্র দ্বারা মাঠে সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে যে সকল সমস্যা রয়েছে, এই যন্ত্র দ্বারা সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে সেসকল সমস্যা অনেকটাই নেই। আর একারণেই কৃষকরা এই যন্ত্রটি একটু বেশি পছন্দ করছে।
এখন প্রয়োজন যন্ত্রটি মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। সরকারের নীতিনির্ধারণই মহল থেকে উদ্যোগী হয়ে এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ইউরিয়া সারের উপর চাপ অনেকটাই কমবে বলে বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণবিদরা মনে করে।
লেখক ঃ ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনইষ্টিটিউট (ব্রি)

শেয়ার করুন

Related News

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫