শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > কূটনৈতিক মত > জাতিসংঘ চাইলে তার অধীনে রাখাইন রাজ্যে সুরক্ষিত অঞ্চল করতে পারে

কূটনৈতিক মত > জাতিসংঘ চাইলে তার অধীনে রাখাইন রাজ্যে সুরক্ষিত অঞ্চল করতে পারে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
জাতিসংঘ চাইলে তার অধীনে রাখাইন রাজ্যে সুরক্ষিত অঞ্চল করতে পারে এবং শক্তি প্রয়োগ করলে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দিতে পারে বলে মনে করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি একে আব্দুল মোমেন।

সম্প্রতি ১৩ জন নোবেলজয়ীসহ ২২জন খ্যাতিমান আন্তর্জাতিক ব্যাক্তিত্ব রোহিঙ্গাদের রক্ষার দাবী জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিকে এক চিঠি নিয়েছেন।

এ বিষয়ে আবুল মোমেনের সাথে কথা বলেন বিবিসির সাংবাদিক। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে নানান প্রশ্নের উত্তর দেন।

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে এই চিঠি আসলে কতটা ভূমিকা রাখতে পারে? বিবিসি বাংলার এমন প্রশ্নের জবাবে, জাতিসংঘের বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি একে আব্দুল মোমেন বলেন, অনেক বছর ধরেই মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুব ভাল। তারা আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। কিন্তু বর্তমান সমস্যা নিয়ে তারা যা করছেন তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এমতাবস্থায় তাদের একটা চাপ দিলে কিছুটা কাজ হতে পারে। তবে কতদূর হবে তা জানি না। তবে আমি যেটা বলতে চাই সেটা সম্ভব বলেও আমি মনে করি।

তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যের যে রোহিঙ্গারা অত্যাচারিত হচ্ছে, আমি মনে করি তারা যেহেতু মানুষ, তাই এই মানুষগুলোকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আর এটা জোর করে মিয়ানমার সরকারকে করাতে হবেও বলে আমি মনে করি।

মিয়ানমারের বর্তমান সমস্যা নিয়ে এই মুহুর্তে জাতিসংঘ ঠিক কি করতে পারে? বিবিসির প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ধারণা জাতিসংঘ জোর করলে, রাখাইন রাজ্য জাতিসংঘের আন্ডারে একটা সুরক্ষিত অঞ্চল করতে পারে এবং সেখানে যারা অত্যাচারিত হয়েছে তাদের সেখানে সুরক্ষা দেওয়া হবে। আর একটা যদি রাখাইনের মধ্যেই করা সম্ভব হয় তাহলে ভাল হবে। আর আমার মতে এটা সম্ভব হবে যখন মিয়ানমার বিশেষ করে আং সান সুচি একটি বিশেষ দায়িত্ব নিবে। এটা আমার প্রথম প্রস্তাব ছিল এবং এখনো আছে। কারণ, জাতিসংঘের এই মডেলটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছে ।

দ্বিতীয় যেটা হেলো সেটা হচ্ছে, এই যে মানবিক কারণে, মুসলমান, হিন্দু খিস্ট্রানসহ যারা অত্যাচারিত হচ্ছে এবং নদী দিয়ে পার হচ্ছে। এর জন্য আমি নদীর মধ্যে জাতিসংঘের একটা রিফিউজি ক্যাম্প চাই। যাতে তারা সুরক্ষিত থাকে। আমি মনে করি জাতিসংঘ আমার এই প্রস্তাব গ্রহণ করবে। এছাড়াও মিয়ানমার সরকারও এই গ্রহণ করবে বলে আমার ধারণা। কারণ এই মডেলগুলো বিভিন্ন দেশেও রয়েছে।

নোবেল বিজয়ীদের এই পাঠানো চিঠি এই ক্ষেত্রে কতটা চাপ সৃষ্টি করতে পারবে? জবাবে তিনি বলেন, আমার ধারণা অং সান সুচি যেহেতু নোবেল বিজয়ী সেহেতু তিনিও মেনেও নিতে পারে বলে আমার ধারণা। আর যদি না মেনে নেওয়া হয়, তাহলে তাকে চাপ দেওয়া হবে। তবে সেই চাপ যে কতটা কাজে আসবে সেটা সঠিক করে বলা যাচ্ছে না। তবে চাপটা অব্যহত রাখতে হবে।

এই ধরণের সমস্যায় চাপ সৃষ্টির কোন নজির আছে কি? জবাবে তিনি বলেন, আমাদের বাংলাদেশে গার্মেন্সে যখন শিশু শ্রমিক ব্যবহার করা হতো, তখন এই শিশু শ্রম বন্ধের জন্য প্রায় ৫৪ জন নোবেল বিজয়ী শিশু শ্রম বন্ধের জন্য একটা পক্ষ নিয়েছিল। যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশকে বলেছিল যে, আপনার যদি এটা বন্ধ না করে তাহলে আপনাদের পণ্য আমরা নিবো না। যেটা ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা পদক্ষেপ। তাই আমার ধারণা যদি মিয়ানমারে এই চাপটা অব্যহত রাখা যায় তবে কাজে আসবে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা