আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
রামদেব ভারতের বিখ্যাত যোগগুরু। আয়ুর্বেদ, ব্যবসায়, রাজনীতি ও কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্তরা রয়েছে তার। ভারতের আয়ুর্বেদিক সংস্থা পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ লিমিটেডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তিনি। দেশটিতে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে এই যোগগুরুর।
কিছুদিন আগে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পরামর্শ দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন এই যোগগুরু। এবার ধূমপানের বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ জানালেন তিনি। কুম্ভমেলায় গিয়ে সাধু-সন্তদের কাছ থেকে কেড়ে নিলেন গাঁজার কলকে। শুধু তা-ই নয়, কঠিন বার্তাও দিয়েছেন তাদের। ধূমপায়ীদের উদ্দেশে যোগগুরু বলেছেন, ‘রাম, কৃষ্ণ এরা যখন ধূমপান করতেন না, তখন আপনারা তাদের ভক্ত হয়ে কেন গাঁজা খাবেন।’
সাধু-সন্তদের সমাবেশ মানেই গাঁজার আখড়া। ভারতের প্রয়াগরাজে চলছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাবেশ কুম্ভমেলা। সারা বিশ্বের সাধু-সন্তদের পদচারণায় মুখর গোটা এলাকা। রাতদিন সেখানে তাই গাঁজার ধোঁয়া ওড়াটাই স্বাভাবিক। এবার চিরাচরিত সেই সেবনের বিরুদ্ধেই কার্যত রুখে দাঁড়ালেন রামদেব।
ভারতের গণমাধ্যমের প্রতিবেদেন জানানো হয়েছে, বুধবার সাধু সন্তদের আখড়ায় গিয়ে গাঁজার কল্কে কেড়ে নিয়ে নিজের হেফাজতে নিয়েছেন। এবং সেগুলো আর কাউকে ফেরতও দেননি তিনি। সাধুদের উদ্দেশে যোগগুরু বলেন, ‘আমরা রাম, কৃষ্ণ এদের জীবনদর্শন অনুসরণ করি। কিন্তু তারা কখনও গাঁজা খাননি। তাহলে আমরা কেন সেই নেশা করব? আমাদের শপথ নেয়া উচিত, আর কখনও কোনো নেশা করব না।’ শুধু বলাতেই শেষ নয়, সাধুদের দিয়ে রীতমতো সেই শপথ করিয়েও নেন রামদেব।
সাধু হতে গেলে কার্যত সংসার-সমাজ-পরিবার ত্যাগ করতে হয়। অনেকে আবার বস্ত্রপর্যন্ত পরিত্যাগ করেছেন। ত্যাগের এই উদাহরণ তুলে ধরে রামদেবের বার্তা, ‘আমরা সাধুরা বাড়ি ছেড়েছি। বৃহত্তর স্বার্থে মা-বাবাকে ছেড়েছি। তাহলে কেন আমরা নেশা ছাড়তে পারব না?’
বাবা রামদেব পরে জানান, তিনি একটি সংরক্ষণশালা তৈরি করছেন। সেখানেই শোভা বর্ধন করবে কেড়ে নেয়া কল্কেগুলো। যোগগুরুর ভাষ্য, ‘যুব সমাজকে ধূমপান ছাড়তে আবেদন করেছি। তার থেকে এই মহাত্মারাই বা কেন বাদ যাবেন।’
বর্তমানে ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১৩৩ কোটি। ক্রমেই সেই সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এ নিয়েও সপ্তাহখানেক আগেই মন্তব্য করেছেন পতঞ্জলির কর্ণধার। তিনি বলেছিলেন, ‘হিন্দু হোক বা মুসলিম, বাছবিচার না করে যেসব বাবা-মা দু’টির বেশি সন্তানের জন্ম দেবেন, তাদের ভোটাধিকার, চাকরি এবং চিকিৎসার সুযোগ কেড়ে নেয়া উচিত সরকারের।
৫৫ দিনের কুম্ভমেলা শেষ হচ্ছে আগামী ৪ মার্চ। সারা বিশ্ব থেকে প্রায় ১৩ কোটি মানুষের সমাগম হবে বলে মনে করছে স্থানীয় প্রশাসন।