রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > কালিয়াকৈরে ১০ বছরের পুরুনো মসজিদ রক্ষায় ফোসে উঠেছে এলাকাবাসি

কালিয়াকৈরে ১০ বছরের পুরুনো মসজিদ রক্ষায় ফোসে উঠেছে এলাকাবাসি

শেয়ার করুন

তুহিন আহামেদ ॥
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চান্দরা নতুনপাড়া রাশিদা বেগম জামে মসজিদটি বন বিভাগের লোকজনের হাত থেকে রক্ষায় এলাকাবাসি ফুসে উঠেছে।
১০ বছরের পুরুনো এ মসজিদটি রক্ষা করতে এরই মধ্যে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবি সিদ্দীক বাবু কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
সরেজমিনে শুক্রবার উপজেলার চান্দরা নতুনপাড়া রাশিদা বেগম জামে মসজিদ নামাজ পড়তে আসা বিভিন্ন মুসল্লীদের সাথে কথা বলে যায়, প্রায় ১০ বছর আগে টিন দিয়ে নির্মাণ করা হয় মসজিদটি। এ মসজিদে প্রতিদিন অন্তত কয়েক’শ মুসল্লী নামাজ আদায় করে থাকে। মসজিদটি জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় পুনঃনির্মাণের প্রয়োজনীতা বোধ করেন। পরে মসজিদটি পুনঃনির্মাণ করার জন্য গত ২৩ জানুয়ারি এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পর্যায়ক্রমে কাজও শুরু এলাকাবাসি।
কিন্তু মসজিদটি নির্মাণে বাঁধা দেয় কালিয়াকৈর রেঞ্জের আওতাধীন চন্দ্রা বন বিট অফিসের লোকজন। পরে ২৬ জানুয়ারি বনবিভাগের লোকজন ওই মসজিদের কাজ বন্ধ করে দেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে ৫জন নির্মাণ শ্রমিককে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাদেরকে মিথ্যা বন মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
ঘটনার পরের দিন ২৭ জানুয়ারি মসিজদটি রক্ষা করতে এলাকাবাসি গণস্বাক্ষর কর্মসূচী পালন করে। এতে ওইদিন ২১৪জন এলাকাবাসি গণস্বাক্ষর করেন।
এদিকে, চন্দ্রা বিট অফিসের বন প্রহরি বেলায়েত হোসেন তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে চান্দরা নতুনপাড়া রাশিদা বেগম জামে মসজিদের সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন ইকবালের মোঠোফোনে ৬লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। টাকা দিলেই মসজিদ করতে কোন সমস্যা হবেনা বলেও ওই রেকর্ড থেকে জানাযায়।
চান্দরা নতুনপাড়া রাশিদা বেগম জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ আমিনুল হক জিন্নাহ জানান, এ মসজিদে আমি বিগত ৫বছর ধরে ইমামতি করছি। কিন্তু মসজিদটি তৈরী করা হয়েছিল ১০ বছর আগে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আল্লাহর ঘর মসজিদ নির্মাণে বাঁধা দেয়া বন বিভাগের লোকজনের ঠিক হয়নি।
বন বিভাগের দাবি ওই মসজিদটি বনের জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে তাই তারা বাঁধা প্রদান করেছেন।
অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালিয়াকৈর রেঞ্জের চন্দ্রা বন বিটের আওতায় ২৩টি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। যার অধিকাংশ মসজিদই পাকা। এর মধ্যে চন্দ্রা বন বিটের ২০ হাত অদূরে পলানপাড়া জামে মসজিদ, চান্দরা দক্ষিণপাড়া বায়তুল আমান জামে মসজিদ, মধ্য বিশ্বাসপাড়া এলাকার বায়তুল মামুর জামে মসজিদ, পূর্ব চান্দরা পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদ, পাশা গেইট এলাকার বায়তুল নূর জামে মসজিদ, পূর্ব চান্দরা কেন্দ্রী জামে মসজিদ, বিশ্বাসপাড়া শাহী জামে মসজিদ, জামিয়া মাদানিয়া আরাবিয়া হানাফিয়া মাদ্রাসা ও মসজিদ, কালামপুর এলাকায় বায়তুল মাফুজ জামে মসজিদ, চান্দরা উত্তরপাড়া ইকরা মাদ্রাসা ও মসজিদ, জালালের গেইট এলাকায় পূর্বচান্দরা উত্তরপাড়া বায়তুল জামে মসজিদসহ মোট ২৩টি মসজিদ রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে এসব মসজিদ নির্মাণ করতেও চন্দ্রা বন বিট কর্মকর্তারা মোটা অংকের মাসুহারা নিয়েছেন।
এছাড়া চন্দ্রা বন বিটের আওতায় ৮টি ঝুটের গুডাউন ও একটি বিশাল আকারের গ্যারেজসহ অসংখ্য দোকানপাট রয়েছে। যা থেকে প্রতি মাসেই এ বিটের কর্মকতা-কর্মচারীরা মাসুহারা নিয়ে থাকেন।
অপরদিকে, চন্দ্রা বন বিটের আওতাধীন ২০টি পার্টিসিপেটদের প্লট রয়েছে। ইতিমধ্যেই অধিকাংশ প্লটের জমি বিক্রি হয়ে গেছে এবং প্লটের জমিতে শত শত ঘরবাড়ি নির্মাণ করে ভাড়া দেয়া হয়েছে। এর সবকিছুই করেছেন চন্দ্রা বন বিটের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে। আর এথেকে প্রতিমাসে ভাড়ার একটা অংশ বন কর্মকর্তারা পেয়ে থাকে বলে পার্টিসিপেটরা জানিয়েছে।
মসজিদ নির্মাণে চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি মোবাইলফোনে রেকর্ড আছে সম্পর্কে চন্দ্রা বিট কর্মকর্তা মীর বজলুর রহমান এর কাছে মোবাইলফোনে জানতে চাইলে এবিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। তবে তিনি এ প্রতিবেদককে অফিসে চা খাওয়ার আমন্ত্রণও জানান।