শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > কারাবন্দী জঙ্গিদের হাতে যাচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ

কারাবন্দী জঙ্গিদের হাতে যাচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজিবি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবু জাফর ওরফে সাঈদের হাত খরচের জন্য প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের টাকা কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে যেত। হুজিবির সদস্যরাই কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা করে বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম এই আসামির পিসি (পারসোনাল ক্যাশ) অ্যাকাউন্টে জমা দিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। শুধু তাই নয়, জাফরের পরিবার ও কারাবন্দী অন্য জঙ্গিদের পরিবারেও নিয়মিতভাবে তারা অর্থ সাহায্য করতেন। অন্যদিকে, চিরকুটের মাধ্যমে মুফতি জাফরের নির্দেশনায়ই এখনো চলছে নিষিদ্ধ এই সংগঠনের কার্যক্রম। অনেক দিন ধরেই হত্যার টার্গেট ব্যক্তিদের অবস্থান, গতিপথ রেকি করার কাজ চলছে।
সর্বশেষ গ্রেফতার হয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে এসব তথ্য দিয়েছেন হুজিবির সদস্য রফিক আহমেদ ওরফে সাজিদ ও উমর ওরফে ফয়জুল ওরফে রবি। তবে কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘হাইসিকিউরিটি কারাগারে বন্দীদের মধ্যে কতজন হুজিবি কিংবা জেএমবির সদস্য তা স্পষ্ট করার জন্য ২৫ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দফতরসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে চিঠি দিয়েছি। এখনো এর উত্তর আসেনি।
পত্রিকায় আসার পরপরই আমরা জসিমউদ্দীন রাহমানীর ব্যাপারে জানতে পেরেছি। এবার জাফরের নাম জানলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘একেকজন বন্দীকে তো একেকটি প্রিজন ভ্যানে নেওয়া যাবে না। আবার আলাদা একটি কারাগারেও রাখা যাবে না। বন্দীরা কোন মাপের সে ব্যাপারে লিখিত কোনো ডকুমেন্ট কারাগারে নেই। থাকলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেত।’ গোয়েন্দা সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে হুজিবির সদস্যরা মুফতি আবু জাফরের পরিবারের সদস্য হিসেবেই তার সঙ্গে কারাগারে এবং আদালত চত্বরে দেখা করে আসছেন।
জাফর কারাগারে বসে হরকাতুল জিহাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার নির্দেশে সব জঙ্গি সংগঠন একত্রিত হওয়ারও চেষ্টা করছে। তিনি নিজেই বাংলাদেশ জিহাদি গ্রুপের জন্য কিছু কাগজ ও মনোগ্রাম তৈরি করেছিলেন। টার্গেট ব্যক্তিদের হত্যা করার জন্য সব ধরনের কৌশলের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নির্দেশনাও এসেছে মুফতি জাফরের কাছ থেকে। তারা কখন, কোথায় অবস্থান করেন? নিরাপত্তাব্যবস্থা কেমন থাকে? তাদের কোন কোন বিষয় পছন্দ? ছদ্মবেশে জঙ্গিরা এসব বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। টার্গেট করা ২০ ভিআইপির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের সাবেক তিন মন্ত্রী, বর্তমান দুই মন্ত্রী এবং সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষাবিদ রয়েছেন।
সূত্র আরও জানায়, টার্গেট ব্যক্তি ও স্থাপনায় হামলা চালিয়ে জামায়াত অধ্যুষিত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা সাতক্ষীরায় আশ্রয় নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া হুজিবির চার জঙ্গির। ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘কারাগার থেকেই সব কলকাঠি নারছিলেন মুফতি জাফর। তিনি দুর্র্ধষ জঙ্গি। যেসব জঙ্গি নেতা ভারত ও পাকিস্তানসহ পাশের দেশগুলোয় পালিয়ে রয়েছেন, তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল। ভাষা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগত মিল থাকায় তারা ভারতীয় জঙ্গিদের সঙ্গে এক হয়ে আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ তৈরির চেষ্টা করছিলেন। এ কারণে সাতক্ষীরায় ঘাঁটি গড়ার চিন্তা করেছিল হুজিবি।’
জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার গভীর রাতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে রফিক আহমেদ ওরফে সাজিদ (৩৪), উমর ওরফে ফয়জুল ওরফে রবি (২৫), নাদিম আহমেদ ওরফে সুমন (৩০) ও সালাউদ্দিন আহমেদকে (২৯) গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।