রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > কাপাসিয়া ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ বরখাস্ত ঃ অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের দ্বন্দ্ব

কাপাসিয়া ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ বরখাস্ত ঃ অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের দ্বন্দ্ব

শেয়ার করুন

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি ॥
গাজীপুরের কাপাসিয়া ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ মোঃ আমজাত হোসেনকে বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িতের অভিযোগে নিয়োগের ৫ মাসের মাথায় উপাধ্যক্ষের পদ থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। কলেজ গভর্নিং বডির সভায় তাকে কলেজের শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও বিধি বহির্ভূত নানা ধরণের কার্যকলাপের অভিযোগে প্রথমে শোকজ ও পরে সাময়িক বরখাস্তের চিঠি দেয়া হয়েছে। অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে ঐতিহ্যবাহী কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার মান ব্যাহত হচ্ছে।
জানা যায়, উপাধ্যক্ষ আমজাত হোসেন ১৯৮৯ সালের ২ অক্টোবর কাপাসিয়া ডিগ্রী কলেজে গনিত বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। তিনি চলতি বছরের ৪ জুন প্রভাষক পদ থেকে পদত্যাগ করে ৫ জুন একই কলেজে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন।
এ ব্যাপারে কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ছানাউল্লাহ জানান, আমজাদ হোসেন এ কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসাবে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন শিক্ষকদের নিয়ে গ্রুপিংয়ের কারণে শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ নষ্ট করা, সময়মত কলেজে উপস্থিত না হওয়া এবং শিক্ষকরা রুটিন অনুযায়ী ক্লাসে উপস্থিত হলেন কিনা তা তদারকী না করে দায়িত্বে অবহেলা করা। অধ্যক্ষের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রধান ও তৃতীয়Ñচতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের চাকুরী থেকে বাদ দেয়ার হুমকী প্রদান করা এবং কলেজের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন সব কাজকর্মে জড়িত থাকারও গুরুতর অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৪-১৫ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে জমা না দিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে নিজের কাছে রেখে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া উপাধ্যক্ষের এমপিওভূক্তির জন্য ডিজি অফিসে জমাকৃত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ম মত এক কপি প্রতিষ্ঠানে জমা না দেয়া এবং তাঁর বিরুদ্ধে কোন মামলা থাকার বিষয় গোপন করা। দায়িত্ব পালনে এ সকল অনিয়মের অভিযোগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর কাপাসিয়া কলেজের গভর্নিংবডি’র সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁকে প্রথমে শোকজ করা হয়। পরে গত ৩১ অক্টোবর কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি ও কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোতাহার মোল্লা’র সভাপতিত্বে সভায় শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে গত ২ নভেম্বর আমজাদ হোসেনকে উপাধ্যক্ষের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ ছানাউল্লাহ জানান, উপাধ্যক্ষ আমজাদ হোসেনকে জিবি’র সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে তাকে জানানো হয়েছে । এ ব্যাপারে উপাধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ কলেজ অধ্যক্ষ ছানাউল্লাহ’র নেতৃত্বে গড়ে উঠা একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কলেজের নানা অনিয়ম, ভর্তি বাণিজ্য, এইচএসসি, ডিগ্রি ও অনার্স পরিক্ষার ফরম পুরণে অনিয়ম, বিভিন্ন ভাবে অর্থ আতœসাৎ, টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে ইচ্ছামত খরচ, ভূতুরে ও ভূয়া ভাউচার তৈরী করে টাকা আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির সাথে জড়িত। এ সকল অসৎ কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় তাঁর বিরুদ্ধে এ মিথ্যা বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগ আনা হয়েছে। নিয়ম বহির্ভূত ও মিথ্যা অভিযোগে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি আইনগত ভাবে মোকাবেলা করা হবে। উপাধ্যক্ষের বরখাস্তের বিষয়টি কাপাসিয়ার প্রধান আলোচনার বিষয়ে পরিনত হয়। এদিকে অভিভাবকরা কলেজের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের মধ্যে আভ্যন্তরিন দ্বন্দ্ব অবসানের আহবান জানান।