শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শিক্ষাঙ্গন > কাপাসিয়ায় স্কুলের সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ

কাপাসিয়ায় স্কুলের সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ

শেয়ার করুন

শামসুল হুদা লিটন, কাপাসিয়া (গাজীপুর) থেকেঃ

কাপাসিয়ায় এক শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করার মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। লাঞ্ছিত ও হুমকির শিকার ওই শিক্ষিকার নাম আসমা আক্তার। তিনি উপজেলা সিংহশ্রী ইউনিয়নের কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। কপালেশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল রানা সায়েলের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ করেন ওই স্কুলের শিক্ষিকা আসমা আক্তার। সোহেল রানা সায়েল কাপাসিয়া
উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার সন্ধা রাতে কাপাসিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। আসমা আক্তার বর্তমানে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় ওই শিক্ষিকার স্বামী
শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সোহেল রান্না সায়েলের বিরুদ্ধে কাপাসিয়া থানায় একটি জিডি করেছেন। জিডি নং ৮৩৩। এদিকে একজন নারী শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক সমাজের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
বুধবার বিকালে এ ঘটনার বিচারের দাবিতে কাপাসিয়া উপজেলার শিক্ষকরা থানার সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
কাপাসিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আইন উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ রায়হান উদ্দীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম, ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহীদুল্লাহ আজাদ, কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শামসুল হুদা লিটন, কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন , বিশ্বনাথ বনিক প্রমূখ।
পরে শিক্ষকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাথে সাক্ষাৎ করে আহত শিক্ষিকার লিখিত একটি অভিযোগ প্রদান করে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন ।

কাপাসিয়ার কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আফজাল হোসাইন বলেন, বিদ্যালয়ের একটি বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে আমরা সকল শিক্ষক যার যার মতো করে বাড়ি ফিরি। কিন্তু সন্ধার পর জানতে পারি আমাদের কম্পিউটার শিক্ষক আসমা আক্তারকে কাপাসিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কে বা কারা হামলা করেছে। এমন খবর পেয়ে ছুটে যাই ঘটনাস্থলে।

লাঞ্চনার শিকার আসমা আক্তার বলেন, কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে পরপর দুইবার সভাপতি ছিলেন সোহেল রানা সায়েল। তিনি বিভিন্ন সময় নানা ধরনের অনিয়ম করতেন। আমি এসবের প্রতিবাদ করি এবং মঙ্গলবার দিন ইউএনও অফিসে মিটিংয়েও প্রতিবাদ করি। এসব কারণেই সায়েল আমাকে কাপাসিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মারধর করতে উদ্যত হয়। আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। আমাকে মেরে নদীতে ফেলে দিবে বলেও হুমকি দেয়।

কাপাসিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, ঘটনা জানতে পেরে সাথে সাথে আহত শিক্ষিকা আসমা আক্তারকে দেখতে হাসপাতালে যাই এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বস্ত করি।
কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, শিক্ষিকার পক্ষে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।