শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > সারাদেশ > কাপাসিয়ায় প্রতিমা ভাংচুরের মিথ্যা ঘটনায় হয়রানীর শিকার এক পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

কাপাসিয়ায় প্রতিমা ভাংচুরের মিথ্যা ঘটনায় হয়রানীর শিকার এক পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

শেয়ার করুন

তাওহীদ হোসেন
কাপাসিয়া ব্যুরো ॥
গাজীপুর: ঐতিহ্যবাহী কাপাসিয়া বাজারের মরহুম ডাক্তার মোতাহার উদ্দিনের একটি দোকান ঘরকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট মামলায় হয়রানীর শিকার হয়ে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার বিকালে কাপাসিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। কাপাসিয়া বাজারের মামলাবাজ তাপস বণিক প্রতিমা ভাংচুর এবং মন্দিরের ক্ষতিসাধনের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে মোতাহার ডাক্তারের পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোবায়ের আহমেদ আশিক।

লিখিত বক্তব্যের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের বাঘিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও তরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মরহুম ডাঃ মোতাহার উদ্দিন ১৯৮৩ সালে বানার হাওলা মৌজার এসএ ৭৫ খতিয়ানে, ১নং আর এস খাস খতিয়ানে এবং এসএ দাগ নং – ১৬৪ ও ৭৮০ নং- আরএস দাগে লিজমূলে ১.৫ শতাংশ সম্পত্তি এবং ১৯৮৪ সালে তার স্ত্রী আমেনা বেগম ক্রয় সূত্রে আরো ৫ শতাংশ সম্পত্তির মালিক প্রাপ্ত হন। এরপর থেকে দীর্ঘদিন যাবত কাপাসিয়া বাজারস্থিত বর্ণিত সম্পত্তিতে দোকান ঘরে ডাক্তারী চেম্বার ও ফার্মিসীতে স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন। দীর্ঘদিন যাবত নির্বিঘেœ বাজারের সকল হিন্দু-মুসলিম ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীদের সাথে মিলেমিশে ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। কখনো কোন সময় কারো সাথে তাঁর কোন মনমালিন্য হয়নি। সবার সাথে সৌর্হাদ্যপূর্ণ ভাব নিয়ে ব্যবসা করেছেন। এলাকার ও দূর-দূরান্তের গরিব অসহায় মানুষদের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন। ডাক্তারের মৃত্যুর পর বর্ণিত সম্পত্তির দোকান ঘরটি তাঁর বড় ছেলে মোর্শেদ উদ্দিন উক্ত প্রতিবেশী তাপস বনিকের নিকট মাসিক ভাড়া হিসাবে দেয়। এর কিছুদিন পর ২০০৯ ইং সালে তাপস বনিক ভাড়ার চুক্তিনামা দলিলটি সম্পত্তি আতœসাতের উদ্দেশ্যে জাল দলিল সৃষ্টি করে। এ নিয়ে পরবর্তীতে গাজীপুর আদালতে মামলার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন মামলা পরিচালনার পর মরহুম ডাঃ মোতাহার উদ্দিন গংদের পক্ষে রায় হয়। ফলে গত ১২/৫/২০১৯ইং তারিখে গাজীপুর আদালত কর্তৃক ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ করে দোকানঘরটির দখল পজিশন মরহুম ডাঃ মোতাহার উদ্দিনের পরিবারের নিকট বুঝাইয়া দেন।

সংবাদ সম্মেলনে দাবী করা হয়, দখল বুঝিয়ে দেয়ার দিন কারো সাথে কোন প্রকার ঝামেলা সৃষ্টি হয়নি। তারপরও তাপস বনিক তাদের হয়রানী করার উদ্দেশ্যে এবং ধর্মিয় অনুভূতিতে আঘাত সৃষ্টির লক্ষ্যে কিছু কুচক্রি মহলের প্ররোচনায় একটি মামলা দায়ের করে। এতে সে উল্লেখ করে যে তার ঘরে থাকা একটি প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। অথচ এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। দীর্ঘদিন যাবত এ এলাকার হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই হিসাবে বসবাস করছে। প্রতিমা ভাংচুরের কোন ঘটনা থাকলে সর্ব প্রথম বাজারের কোন ব্যবসায়ী বা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সংগঠন গুলো জানার কথা ছিল। সম্প্রতি এ বিষয়ে কয়েকটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল একটি মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলক ভাবে সংবাদ প্রচার করেছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রচারিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এছাড়া প্রতিমা ভাংচুরের বিষয়টি সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বদু, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন প্রধান, কাপাসিয়া উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি চিত্ত রঞ্জন সাহা, উপজেলা পূঁজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাড. শেখর চন্দ্র সাহা, জয়কালী মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জীবন ভৌমিক, এলাকাবাসি মোজাম্মেল হক, কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সুফিয়া বেগম, কাপাসিয়া উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাহীন, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাংস্কৃতিক সম্পাদক সঞ্জীব কুমার দাস, ব্যবসায়ী বিজয় সাহা প্রমুখ।