শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > কাপাসিয়ায় পিতার মৃত্যুর শোক নিয়ে পিএসসি পরীক্ষায় অংশ কন্যা ঃ পরিবারের আহাজারি

কাপাসিয়ায় পিতার মৃত্যুর শোক নিয়ে পিএসসি পরীক্ষায় অংশ কন্যা ঃ পরিবারের আহাজারি

শেয়ার করুন

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বাড়ির পাশে পিতার দাফন শেষ হওয়ার ১২ ঘন্টা পর গভীর শোক নিয়ে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে তুচ্ছ ঘটনায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত কাপাসিয়া সদর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন আলমের শিশু কন্যা সানজিদা। বাবা, মায়ের বড় মেয়ে হিসেবে বড়া বড়ই ক্লাসে মেধাবী সে। সদ্য সিঙ্গাপুর থেকে ছুটিতে আসা বাবা শাহীনের অনেক আশা ছিল সার্বক্ষনিক মেয়ের পাশে থেকে পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহযোগিতা করা। মেয়ের পরীক্ষার মাত্র একদিন আগে গত শনিবার প্রাণ গেল বাবা শাহীন আলমের। মাত্র ১ হাত লম্বা একটি লেবুর ডালা কাটার সৃষ্ট ঘটনায় প্রাণ গেল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহীন আলমের। সেই সাথে এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে একই গ্রামের নারী,পুরুষসহ অন্তত ১৭ জন। শাহীনের মৃত্যুতে তার সমর্থকরা প্রতিপক্ষের বাড়ীতে ভাংচুর ও আগুন দিয়েছে। এতে পুড়ে গেছে ৮টি বসত ঘর এবং ভাংচুর হয়েছে আরও ২টি বাড়ী ও ১টি দোকান।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, শাহীনই ছিল তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার অকাল মৃত্যুতে স্ত্রী ২ সন্তান বড় মেয়ে সানজিদা, ছোট মেয়ে স্থানীয় ক্যামব্রীয়ান স্কুলের নার্সারিতে পড়–য়া সাবরিনা শোকে হতবিহ্বল। গতকাল রোববার সরজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাবার ছবিতে তারা বাবাকে খুঁজছে। আত্মীয় পরিজন ও গ্রামের অনেক লোকজন এসেছে তাদের সান্তনা দিতে ও সমবেদনা জানাতে। রায়নন্দা গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদ উস্তাকারের সপ্তম পুত্র শাহীন এলাকার প্রখ্যাত রাজমিস্ত্রি ছিল। সে উপজেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিল।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার সকালে রায়নন্দা দরগাপাড়া মসজিদের উন্নয়নের জন্য বাঁশ সংগ্রহের জন্য মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ চানমিয়া অন্যান্য মুসল্লীসহ কতিপয় ব্যক্তি পাশের দক্ষিণ পাড়ায় মৃত হাবিবুর মাষ্টারের বাড়িতে বাঁশের জন্য যায়। তার বাড়ি সংলগ্ন রাস্তায় লেবু গাছের একটি ডালা বাশ সংগ্রহকারী এক কিশোরের লুঙ্গীতে আটকে গেলে সে এক হাত লম্বা ওই ডালাটি কেটে ফেলে। এতে ওই বাড়ির লোকদের সাথে মসজিদ কমিটির লোকদের সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে হাবিবুর মাস্টারের লোকেরা তাদের লোহার রড ও দা দিয়ে হামলা করে। এতে নারী, পুরুষসহ অন্তত ১৭ জন গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে শাহীন এ ঘটনা জানতে হাবিবুর মাষ্টারের বাড়িতে গেলে তার পুত্র রুহুল, মাহবুব ও চাচাতো ভাইয়েরাসহ এলাকার ১০/১২ জন সন্ত্রাসী শাহীনকে লোহার রড দিযে এলোপাথারি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এতে শাহীনের মাথা ফেটে মগজ বের হয়ে যায় এবং হাত ও পা ভেঙ্গে যায়। মুমুর্ষূ অবস্থায় তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরদিন শনিবার ভোরে মূত্যুবরণ করে। ওই দিন রাতে তার জানাজা নামাজ বাড়ি সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এবং দাফন সম্পন্ন করা হয়। হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আজমত আলী বাদী হয়ে হাবিবুর মাষ্টারের দুই পুত্র রুহুল আমিন, মাহাবুল তাদের মা লাইলী বেগম, রিংকু, মোফাজ্জল, মোবারক, আলম, রতন, শাকিল, রুবেল, বাদল, ইমরানকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
থানার ওসি আহসান উল্লাহ জানান, আসামীরা পলাতক তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।