শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > কাপাসিয়ায় ছাত্রীকে অপহরণ করে গণধর্ষণের পর হত্যা ঃ গ্রেফতার ২

কাপাসিয়ায় ছাত্রীকে অপহরণ করে গণধর্ষণের পর হত্যা ঃ গ্রেফতার ২

শেয়ার করুন

কাপাসিয়া (গাজীপুর) ব্যুরো থেকে আকরাম হোসেন রিপন ॥
স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবার মেধাও ছিল, সেই স্বপ্ন তার অপূর্ণই রয়ে গেল। পপিকে বখাটেরা বাঁচতে দিলনা। গাজীপুরের কাপাসিয়ায় পপি আক্তার (১২) নামে এক স্কুল ছাত্রীকে গভীর রাতে বাড়ি থেকে বখাটেরা অপহরণ করে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার রাতে পুলিশ তার লাশ বাড়ি পাশর্^বর্তী ঝাউবন থেকে উদ্ধার করেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য আজ শনিবার সকালে গাজীপুর সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। সে কড়িহাতা ইউনিয়নের বিহাইদুয়ার গ্রামের হাতীবান্ধা টেক এলাকার মৃত মুখলেছুর রহমানের একমাত্র কন্যা। সে আড়াল জিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী। সকাল ১১টায় স্থানীয় আড়াল বাজারে পপি হত্যার বিচারের দাবীতে তার বিদ্যালয়ের ছাত্রÑ শিক্ষক, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্যবৃন্দ কালোব্যাচ ধারণ করে মানববন্ধন করেছে। পরে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট রেজাউর রহমান লস্কর মিঠুর নেতৃতে ছাত্রÑশিক্ষকরা নিহত পপির বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা প্রকাশ করেন। পপি হত্যাকান্ডের ঘটনায় তাঁর বড় ভাই লিমন বাদী হয়ে একই গ্রামের মৃত আতর আলীর পুত্র শরীফুল ইসলাম শরীফ (২৮), খোরশেদ আলমের পুত্র আখতার (২২) ও বাছির উদ্দিনের পুত্র শামীম (১৯) ৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত কয়েক জনকে আসামী করে কাপাসিয়া থানায় একটি হত্যা মামালা দায়ের করেছেন। পুলিশ শুক্রবার রাতেই পপির খালুর ছোট ভাই শরীফ ও আখতারকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জসীম উদ্দিন জানান, তদন্তের স্বার্থে কিছুই বলা যাবেনা।
তবে একাধিক সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত শরীফ পপি হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান জানান, পপির মতো অনেকেই স্কুলে আসা যাওয়ার পথে বখাটেদের উৎপাতের স্বীকার হয়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে পপির বাবা মোখলেছুর মারা যান। অভাবের তাড়নায় ৩ বৎসর পূর্বে তার মা লিপি আক্তার চাকুরি করতে লেবাননে যান। ২ ভাই ও এক বোনের মাঝে সে সবার ছোট । বাবা মারা যাওয়ায় পাশে নানীর বাড়িতে তারা বসবাস করে। গত বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পর নানীর বাড়িতে ফিরে বিকালে তাঁর বাড়ির পাশের্^ খালা মাজেদার বাড়িতে বেড়াতে যায়। রাতে ওই বাড়িতেই সে তার ছোট এক খালাতো ভাই মাজাহারুলকে নিয়ে এক ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। পাশের ঘরে খালা, খালু ঘুমিয়ে ছিল। হঠাৎ গভীর রাতে ছোট ভাই জেগে দেখে পপি ঘরে নেই। পরে বাড়ির লোকেরা খোঁজাখুঁিজ করে এক পর্যায়ে শুক্রবার রাতে পপির লাশ বাড়ির পাশে পাওয়া যায়।
খালা মাজেদা আক্ষেপ করে বলেন, আমার ছোট দেবর শরীফ, ভাগ্নিকে (পপি) বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করত। তাঁর কু- প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পপিকে গভীর রাতে তোলে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ ও হত্যা করেছে।
থানার ওসি আহসান উল্লাহ জানান, এজাহার নামীয় দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেয়ের মামা শরীফ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তবে ধর্ষণ জনিত কিনা তা ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।