আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
কাতারকে সর্বোতভাবে একঘরে করার সৌদি জোটের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কাতার অবরোধ মোকাবিলা করে নিজের পায়ে স্বনির্ভর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কাতার ঘোষণা করেছে, অবরোধ প্রলম্বিত হলেও তাদের কোন সমস্যা নেই। কিন্তু ছয় মাস ধরে চলা অবরোধের পরও প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল না আসায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বিরোধীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এমনকি কাতারের শাসনের দায়িত্বে থাকা থানি পরিবারেও ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম হাফিংটন পোস্টের এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে।
কূটনৈতিক ও অথনৈতিকভাবে কাতারকে বর্জনে আন্তর্জাতিক সমর্থন পায়নি সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। তাই তারা এবার দেশটির আমির শেখ তামিমের জনপ্রিয়তায় ধস নামিয়ে ক্ষমতায় পরিবর্তন আনতে চাচ্ছে। কাতার তাদের অপমান করেছে বলে সৌদি আরব ও আমিরাতের দাবির প্রতিবাদ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কাতারের সঙ্গে সৌদি নেতৃত্বে অবরোধ আরোপকারী দেশগুলোকে সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছে।
এ বিষয়ে কাতার জানিয়েছে, তারা অবরোধ আরোপকারী দেশের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসাতে চায়। কিন্তু নিজের সার্বভৌমত্বে ব্যাপারে ছাড় দিবে না। পরে সৌদি আরব ও আমিরাত সংকট সমাধানে অনাগ্রহ দেখায়।
ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ও কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে এক আলোচনায় কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আল থানি বলেন, শেখ তামিমকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার যেকোনও চেষ্টা প্রতিহত করতে তারা প্রস্তুত। শেখ মোহাম্মদ বলেন, কাতার এ ধরনের যেকোনও সমস্যায় ফ্রান্স, তুরস্ক, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা পাবে বলে আশা করে।
তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ থামিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের অনেক বন্ধু রয়েছে। তবে প্রতিপক্ষের আচরণের ধরনের কারণে আলোচনার টেবিলে নিজেদের জন্য সব বিকল্পই রাখতে হবে।
এদিকে সৌদি আরব ও আমিরাতের মালিকানাধীন দুটি সংবাদমাধ্যমে কাতারের সাবেক আমির শেখ খালিফ বিন হামাদ আল থানির ছেলে শেখ সুলতান বিন সুহাইম আল থানির পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। এর আগে এসব সংবাদমাধ্যম সৌদি আরবে বাস করা কাতারের আমিরের আরেক আত্মীয়ের পক্ষেও প্রচারণা চালাচ্ছিল।
প্যারিসের বাসিন্দা শেখ সুলতানের কাতারের ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর বেশ প্রভাব ছিল। তিনি গত বছর সৌদি আরবে ৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের রিয়াল স্টেট ব্যবসার চুক্তি করেন। তবে গত অক্টোবরে কাতার কর্তৃপক্ষ শেখ সুলতানের দোহার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার বাবার বিভিন্ন সম্পদ জব্দ করে। একই সময়ে তারা শেখ আব্দুল্লাহর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে।
কাতারের আরেক উপজাতি আল ঘাফরানের প্রধান শেখ তালিব বিন লাহিম গত সেপ্টেম্বরে সৌদি আরব পালিয়ে যান। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, সৌদি আরবকে অপমান করে কথা বলতে না চাওয়া তাকে এমন শাস্তি পেতে হয়েছে। এর কিছুদিন আগেই তিনি সৌদি যুবরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
এরআগে কাতারে রাজ পরিবারের কয়েক সদস্যকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। তারা অবরোধকারী সৌদি জোটের বিরুদ্ধে জনসম্মুখে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়। এজন্য ভিতর বাইরে অনেক শত্রু লুকিয়ে আছে বর্তমান শেখ তামিম সরকারের। এসব কিছু মোকাবেলা করে কাতারকে সুষ্ঠু ও সঠিক পথে পরিচালিত করাই এখন মূল টাগের্ট শেখ তামিম সরকারের। বাংলা ট্রিবিয়ন অবলম্বনে