আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
সৌদি নেতৃত্বে ৬ আরব দেশ যখন সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে কাতারের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ ও যাতায়াত অবরোধ করেছে তখন যুক্তরাষ্ট্র দেশটির কাছে এফ- ৩৫ যুদ্ধ বিমান বিক্রির জন্যে ১২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে। এ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এক দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি আরব ও ইসরায়েল সফর, এরপর সৌদি নেতৃত্বে ৬ আরব দেশের কাতারের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ব্যাপারে ইসরায়েলের খোলামেলা সমর্থন অন্যদিকে মার্কিন প্রশাসনের দেশটির কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমান বিক্রি কূটনৈতিক সংকট আরো জটিল করে তুলবে বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বুধবার ওয়াশিংটন ও দোহার মধ্যে এফ-৩৫ ক্রয়ে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন কাতারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ আল আতিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পক্ষে জিম ম্যাটিস। কাতার নিউজ এজেন্সি এ সংবাদ নিশ্চিত করেছে।
কাতারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ আল আতিয়া বলেন, সন্ত্রাস দমনে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। ঘনিষ্ট কৌশলগত মিত্র হিসেবে সামরিক সহযোগিতার অংশ হিসেবেই এসব যুদ্ধ বিমান বিক্রির চুক্তি হয়েছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে এ বিমান ক্রয়ের চুক্তি দেশটির সঙ্গে কাতারের কৌশলগত ও প্রতিরক্ষার সহযোগিতার সম্পর্ক অগ্রগতির একটি ফলক এবং এধরনর যৌথ সামরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে আশা রাখি।
এদিকে কাতারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমান বিক্রি দেশটিকে অত্যাধুনিক ক্ষমতা দেওয়া ছাড়াও দুটি দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।
কাতারের সঙ্গে এ চুক্তি হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে ১১ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি হয় যা আগামী ১০ বছরে ৩৫ হাজার কোটি ডলারে বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া কাতারের বিরুদ্ধে ইরানে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা ও সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে সৌদি আরব,মিসর, আমিরাত ও বাহরাইনের মত দেশগুলো। যা কাতার অব্যাহতভাবে নাকচ করে আসছে। কাতারের সঙ্গে স্থল সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার পর আকাশ ও জল পথে কাতারের বিমান ও নৌ যোগাযোগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় দেশটি ইরানের আকাশ পথ ও ওমানের সঙ্গে বন্দর যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন কাতারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে সহযোগিতার অভিযোগ এনে এর আগে টুইট বার্তা দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও একই ধরনের টুইট বার্তা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরও কাতারের বিরুদ্ধে মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পর্ককে সমস্যা হিসেবেই দেখছে।
অথচ এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি যুদ্ধ জাহাজ কাতার নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নিতে দেশটির দক্ষিণে হামাদ বন্দরে এসে পৌঁছেছে। কাতারের নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা মার্কিন ওই দুই যুদ্ধজাহাজের কর্মকর্তাদের স্বাগত জানান। মধ্যেপ্রাচ্যে ও উপসাগর এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি হচ্ছে কাতারের আল-উরি বিমান ঘাঁটি। ১১ হাজার মার্কিন সৈন্য ছাড়াও এ ঘাঁটি থেকে শতাধিক যুদ্ধ বিমান ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নিচ্ছে।