শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > কর্ণফুলী গ্যাসের সাবেক এমডিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

কর্ণফুলী গ্যাসের সাবেক এমডিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমিক২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুরকে বাদ দিয়ে কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সানোয়ার হোসেনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলায় অপর চার আসামি হলেন- কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানির সাবেক সচিব ও বর্তমানে উপ-মহাব্যবস্থাপক আমির হামজা, সাবেক ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ আল মামুন, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) চৌধুরী আহসান হাবীব এবং সাবেক এমডি জামিল আহমেদ আলীম।

মামলার এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে কর্ণফুলী গ্যাসফিল্ড কোম্পানি লিমিটেডে জনবল নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে উপ-পরিচালক ঋতিক সাহা চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় বাদী হয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৭। মামলা দায়েরের পর বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।

পেট্রোবাংলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলি গ্যাসফিল্ডসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দুর্নীতি ও আন্ডার হ্যান্ডেলিংয়ের অভিযোগে একবছরের বেশি সময় আগে অনুসন্ধান শুরু করেছিল দুদক। হোসেন মনসুরের বিরুদ্ধেই ছিলো মূল অভিযোগ।

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে হোসেন মনসুরের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে ‘অব্যাহতি’ দেয় কমিশন। দুদক বলছে, তাকে মামলা পরবর্তী তদন্তের আওতায় রাখা হয়েছে।

চলতি মাসের ২ জুন এ মামলার অনুমোদন দেয় কমিশন। মামলা অনুমোদনের পর জানতে চাইলে দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগের সঙ্গে হোসেন মনসুরের সংশ্লিষ্টতার দালিলিক প্রমাণ না থাকায় তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তবে তদন্ত পর্যায়ে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে গত ২১ মে হোসেন মনসুরসহ ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন পেশ করা হয়।

দুদকের উপ পরিচালক ঋতিক সাহা ও সহকারী পরিচালক আল আমিন যৌথভাবে জনবল নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করেছেন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো প্রকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই কর্ণফুলী গ্যাসফিল্ড কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া ড. হোসেন মনসুরের নির্দেশে এবং অন্যদের সংশ্লিষ্টতায় অবৈধপন্থায় হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে অন্য পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে কমিশন মামলার অনুমোদন দিলেও কেবল হোসেন মনসুরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

পাঁচ বছর ধরে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে গত বছরের অক্টোবরে এ পদ থেকে বিদায় নিয়েছেন ড. হোসেন মনসুর।

দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির নিয়োগের ক্ষেত্রে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের অনুমতি পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। কোম্পানির জিএমের নেতৃত্বে কমিটির নিয়োগ-সংক্রান্ত সভায় তিনটি পদের জন্য ৩১টি শূন্য পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হলেও শেষ পর্যন্ত এ পদে লোকনিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১৪৩ জন। নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলাকোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা এবং নারী কোটা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি।

এর আগে হোসেন মনসুর এবং পেট্রোবাংলার ১৩টি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও দুর্নীতি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কমিশনের উপ-পরিচালক আহসান আলীকে। এরপর আহসান আলীকে বাধ্যতামূলক অব্যাহতি দেওয়ার পর গত ১৩ এপ্রিল সহকারী পরিচালক শেখ আবদুস সালামকে দায়িত্ব দেয় কমিশন।

অনুসন্ধান শেষে আবদুস সালাম পেট্রোবাংলার ড. হোসেন মনসুরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দেন কমিশনে। কমিশন এ প্রতিবেদনটি আমলে না নিয়ে তাকেও এ অনুসন্ধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। পরে অভিযোগটি নতুনভাবে অনুসন্ধানের জন্য উপপরিচালক ঋতিক সাহা ও সহকারী পরিচালক আল-আমিনকে দেওয়া হয়।

দুদকের এ দুই কর্মকর্তার যৌথ প্রতিবেদনে হোসেন মনসুরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা হলেও শেষ পর্যন্ত পেট্রোবাংলার সাবেক এ চেয়ারম্যানকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বাংলানিউজটোয়েটফোর.কম