শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ওয়াসার কর্মচারীর সম্পদের পাহাড়, শিগগিরই প্রতিবেদন

ওয়াসার কর্মচারীর সম্পদের পাহাড়, শিগগিরই প্রতিবেদন

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: ঢাকা ওয়াসা যাত্রাবাড়ীর শাখার রাজস্ব পরিদর্শক (মিটার রিডার) মো. হারুনুর রশিদ এখন শতকোটি টাকার মালিক। রাজধানী ঢাকার বুকেই গড়ে তুলেছেন চারটি বাড়ি এবং নিজ এলাকায় ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে কিনেছেন শত বিঘা জমিসহ বিলাস বহুল বাড়ি ও দোকানপাট।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হারুনুর রশিদের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারির সুপারিশ করে প্রাথমিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন জমা দিতে যাচ্ছেন অনুসন্ধানী কর্মকর্তা ও দুদকের উপ-পরিচালক আব্দুছ ছাত্তার সরকার। অল্প কয়েক দিনের মধ্যে এই প্রাথমিক অনুসন্ধানের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে বলে দুদক সূত্র বাংলামেইলকে নিশ্চিত করেছে।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, হারুনুর রশিদ যাত্রাবাড়ীর শাখা পিপিআই রাজস্ব জোন-৫ এর রাজস্ব পরিদর্শক (৩য় শ্রেণির কর্মচারী) হিসেবে কাজ করেন। এর আগে তিনি ঢাকা ওয়াসা মহাখালী পিপিআই রাজস্ব জোন শাখায় কাজ করতেন। রাজধানীর আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন থেকে নিয়মিত লাখ লাখ টাকা মাসোহারা আদায় করা হচ্ছে তার প্রধান কাজ। আর এর মাধ্যমে তিনি গড়ে তুলেছেন নামে-বেনামে শতকোটি টাকার সম্পদের পাহাড়। যা তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারীর পক্ষে আঙুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার মত।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, ঢাকা মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে একটি বাড়ি, চানমিয়া হাউজিংয়ে একটি ফ্লাট, একই এলাকার ঢাকা উদ্যানে একটি বাড়ি, টিক্কা পাড়ায় একটি বাড়ি রয়েছে হারুনুর রশিদের। যেগুলোর বর্তমান মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকারও বেশি।

তার গ্রামের বাড়ি হচ্ছে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে উপজেলায়। সেই গ্রামের বাড়িতে কিনেছেন শত বিঘা জমি এবং গড়ে তুলেছেন একটি বিলাস বহুল বাড়ি। এসব মিলে তার গ্রামের বাড়িতেই আছে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার মত সম্পদ। এছাড়া গয়েশ্বর বাজারের সঙ্গে ৮৫ শতক জমির ওপর রয়েছে তার একটি পোল্ট্রিফার্ম। ওই বাজারের পাশে একটি বাড়ি, চারটি দোকান রয়েছে হারুনুর রশিদের। সব মিলিয়ে ওই বাজারে তার প্রায় ১০কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি আছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও তার আছে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি এবং সেই সঙ্গে আছে কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স। আর ওই গাড়ি নিয়ে প্রতিমাসে গ্রামের বাড়িতে যান রাজনৈতিক কাজে। এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবেও বেশ পরিচয় আছে তার। এমনকি ভবিষ্যতে এলাকায় এমপি প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছাও আছে এই ওয়াসার মিটার রিডারের।

দুদকের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বাংলামেইলকে বলেন, এই বছরের শুরুতেই অর্থাৎ জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে মো. হারুনুর রশিদের বিরুদ্ধে আসা বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল দুদকের সহকারী পরিচালক মো.আল আমিনকে। তবে তিনি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বদলি হওয়ায় অনুসন্ধানী কর্মকর্তা পরিবর্তন করে দায়িত্ব দেয়া হয় দুদকের উপ-পরিচালক আব্দুছ ছাত্তার সরকাকে। তার দীর্ঘ ৮ মাসের অনুসন্ধানে এসব অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য বেড়িয়ে আসে।

যা দুদকের অনুসন্ধানী কর্মকর্তার কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হয়েছে। আর এসব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য এবং আরো অধিকতর অনুসন্ধানের জন্য তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ প্রদানের সুপারিশ করে প্রাথমিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন জমা দিতে যাচ্ছেন ওই অনুসন্ধানী কর্মকর্তা।

তবে অনুসন্ধানী কর্মকর্তা আব্দুছ ছাত্তার সরকারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বাংলামেইল২৪ডটকম