বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
ভারতের মুসলমানদের চলা নির্যাতনের কারণে দেশটিতে চরম বিক্ষোভ চলাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ভারতে দাঙ্গা চলছে। নরেন্দ্র মোদি আপনি কখন ঢাকা আসছেন, যখন দিল্লিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উপস্থিত রয়েছেন এবং সেই সময়ে নিকৃষ্টতম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অভিযোগ আসছে বিভিন্ন মহল থেকে, এই দাঙ্গার সঙ্গে আপনার দল অভিযুক্ত। সেই সময় আপনার বাংলাদেশে আসাটা কতটুকু শোভনীয় হচ্ছে, সে বিষয়ে চিন্তা করা দরকার।
সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) আয়োজিত ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসছেন, ভালো কথা; কিন্তু আমাদের সমস্যার সমাধান কতটুকু করছেন? আমাদের সমস্যাগুলোর তো কোনো সমাধান হচ্ছে না।
২ মার্চ আ স ম আবদুর রবকে সম্মান না জানানোয় আক্ষেপ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কেন দিবসটি পালন করা হচ্ছে না, এটি তো পালন করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এখন যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের সঙ্গে স্বাধীনতার কতটুকু সম্পর্ক সেটি এখন জনগণের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকে একাত্তরের সেই স্বাধীনতাযুদ্ধের যে চেতনা, যুদ্ধের পরে মানুষের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল এবং বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে মানুষ যে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিল, তার আশা-আকাঙ্ক্ষা এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি।
সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে, মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার জনগণের ম্যান্ডেট না নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের যে চেতনা সেটিকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। তারা প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
সরকার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের আড়াল করার চেষ্টা করছে, এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা আজকে শুধু আবদুর রবকে ভুলে যাচ্ছে না, স্বাধীনতাযুদ্ধে যারা অবদান রেখেছিলেন, তাদের স্মরণ করেন না। ২৬ মার্চ যখন দেশ দিশেহারা হয়ে পড়েছিল, তখন চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতাযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, তাকেও তারা মনে করে না। মনে করে না তারা এমএজি ওসমানীকে, মনে করে না মওলানা ভাসানীকে। তারা কখনই স্বীকার করতে চায় না এ স্বাধীনতাযুদ্ধের সঙ্গে দেশের সব মানুষ জড়িত ছিল।
সবাইকে সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে আমাদের শপথ নিতে হবে- এ দেশকে যেমন ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছিলাম, আজকে আবারও আমাদের প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হোক স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে। আসুন আজকে আমরা যারা দেশকে ভালোবাসি, গণতন্ত্রকে ভালোবাসি তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবানলের মতো একটা শক্তি সব কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে, তাকে আমরা পরাজিত করে। জনগণের শাসনকে প্রতিষ্ঠা করি।’
আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য দেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর প্রমুখ।