সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > এরশাদের স্বপ্নের মৃত্যু

এরশাদের স্বপ্নের মৃত্যু

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আঁতুড়ঘরেই আটকে গেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন প্রস্তাবিত চারদলীয় জোট। অনেক কৌশলে তিনি এ জোট গঠন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পর্দার অন্তরালের দৌড়ঝাঁপ অন্যদের মধ্যে সংশয় তৈরি করে। এ কারণে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তার লুকায়িত স্বপ্নের মৃত্যু ঘটে। স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা ও জাসদের সভাপতি আসম আবদুর রবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এরশাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয়। তাই তাদের পক্ষে এ জোটে যাওয়া সম্ভব নয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাসদের পক্ষ থেকে এরশাদকে বলা হয়েছে, আপনি মুখে যাই বলুন না কেন হঠাৎ করে রঙ বদলে ফেলবেন- এমনটাই জানাজানি হয়ে গেছে। জাসদের একজন কেন্দ্রীয় নেতা এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমাদের মনে হচ্ছে এরশাদ দর কষাকষি করে নিজে একা দালাল না হয়ে আমাদেরকে নিয়ে নৌকা মিছিলে যোগ দিতে চাইছেন। এরশাদ খোলাসা করেননি। তবে তার অসংলগ্ন কথাবার্তায় অন্যদেরকেও সংশয়ের মধ্যে ফেলেছে। বিবিসিকে আসম আবদুর রব বলেছেন, এরশাদের সঙ্গে জোট গড়া নিয়ে কোন কথাই হয়নি।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, বুধবার আমরা বি. চৌধুরী সাহেবের বাসায় বসেছিলাম। তখন জোট গঠন নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে। এরশাদ তার অবস্থান স্পষ্ট করেননি। এখন তো নানা কথা শুনছি।

আমরা অর্থবহ নির্বাচন ছাড়া কোন নির্বাচনেই যাবো না। সবাই গেলেও না। তাই এরশাদের ফাঁদে পা দেয়ার কোন সুযোগই নেই। তাছাড়া, এরশাদকে বলেছি আগে মহাজোট ছাড়ুন। তারপর আমরা অভিনন্দন জানাবো। তিনি বলেন, এরশাদকে সখীপুরে দাওয়াত দেইনি। অথচ তিনি বলে বেড়াচ্ছেন আমি তাকে দাওয়াত দিয়েছি।

অধ্যাপক বি. চৌধুরী একজন বর্ষীয়ান রাজনৈতিক। বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। প্রথম মহাসচিবও ছিলেন তিনি। তবে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল যখন তিনি প্রেসিডেন্ট ছিলেন। পরিণতিতে তিনি প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে বিকল্প ধারা গঠন করেন। সামপ্রতিককালে বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব কমেছে। নির্দলীয় সরকারের দাবির প্রতিও তিনি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

এই অবস্থায় এরশাদের সঙ্গে জোট গঠনের ব্যাপারে তার অবস্থান কি হবে সেটা স্পষ্ট নয়। তবে নামপ্রকাশ না করার শর্তে বিকল্প ধারার একজন নেতা বলেন, এরশাদের উদ্দেশ্য যদি পাতানো নির্বাচন হয় তাহলে বি. চৌধুরী সেখানে যাবেন না এটা লিখে দিতে পারেন। এরশাদ আসলে কি চেয়েছিলেন- এ নিয়ে নানা কৌতূহল রাজনৈতিক অঙ্গনে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন নিশ্চয় এর পেছনে এরশাদের বড় কোন মতলব রয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে যা জানা গেল তাতে মনে হয় প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি করে হঠাৎ করে নির্বাচনে চলে যাওয়া। কিছুদিন ধরে এরশাদ সরকার বিরোধী বক্তব্য রেখে চমক সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। বলেছেন, এ মুহূর্তে সরকারের সঙ্গে গেলে মানুষ তাকে থুথু দিবে। যদিও সিঙ্গাপুর সফরকালে দু’টি অফার তার কাছে এসেছিল। ১১০টি আসন এবং মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা। এরশাদ তাতে সায় দেননি। কেউ কেউ অবশ্য বলছেন এরশাদ আরেকটি উদ্দেশ্য নিয়ে খেলছেন। চলমান সঙ্কট থেকে কোন পরিস্থিতি তৈরি হলে এর সুবিধা নেয়া।