রায়হান পারভেজ, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজকের বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, এমন বাংলাদেশের জন্য বীর শহীদরা আত্মত্যাগ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের মাঠেই দাঁড়াতে দিচ্ছে না। জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের মারধর করছে, প্রশাসনের সহায়তায় প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে চাপ দিচ্ছে। আবার ঠুনকো কারণে বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের প্রার্থীতা বাতিল করছে। এমন বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, এমন বাংলাদেশের জন্য বীর শহীদরা আত্মত্যাগ করেনি।
জিএম কাদের বলেন, আজকে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে আমাদের দেশের ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছিল, দুই লক্ষ লাখ মা-বোন তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছিল, তাদের প্রত্যাশা কি আমরা পূরণ করতে পেরেছি?
আজ সকালে জুরাইন রেলগেটে জাতীয় পার্টি শ্যামপুর ও কদমতলী আয়োজিত বিজয় সমাবেশ ও পতাকা মিছিল উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার পূর্বে পশ্চিম পাকিস্তানীরা আমাদের শোষণ করতো, পূর্ব পাকিস্তানের টাকায় তারা পশ্চিম পাকিস্তান সাজাতো। এখনো আমারা শোষণের শিকার হচ্ছি, আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকা প্রতিবছর পাচার হয়ে যাচ্ছে। আবার পশ্চিম পাকিস্তানীরা আমাদের ২য় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করেছিলো। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পরিণত করেছিলো তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিকে। ঠিক তেমনিভাবেই এখনো আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের সাথে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। ক্ষমতাসীন দল না করলে চাকরি মেলেনা, ব্যবসা করতে পারে না। বৈষম্য সৃষ্টি করেছে ধনী ও গরীবের মাঝে। ধনীদের জন্য এক আইন আর গরীবদের জন্য আলাদা আইন। স্বাধীনতার মূল নীতি হচ্ছে শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়া। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে স্বাধীনতার মূল চেতনা থেকে দেশকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।
সমাবেশে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের মানুষ সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতারাই বলেছিলেন জাতীয় পার্টির সমর্থন না পেলে ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে আওয়ামী লীগ টিকতো না। আবার ১৩ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকে বিএনপি হাহুতাশ শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অচল মূদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দেশের মানুষ নতুন মুদ্রা চায়, যারা দেশের মানুষকে শোষণ ও বৈষম্য থেকে মুক্তি দিতে পারবে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ৩১ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকেও এখনো জাতীয় পার্টি রাজনীতির মাঠে শক্তিশালীভাবেই টিকে আছে। কারণ, জাতীয় পার্টি দেশের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছে। দেশের মানুষ আগামী দিনে জাতীয় পার্টিকেই রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। জাতীয় পার্টি দেশ ও মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করছে। ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের জন্য জাতীয় পার্টি রাজনীতি করে না।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস চেয়ারম্যান আমির উদ্দিন আহমেদ ডালু, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে, যুগ্ম সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য শেখ মাশুকুর রহমান, সমরেশ মন্ডল মানিক, এম এ সোবহান, আক্তার হোসেন দেওয়ান, ইব্রাহিম মোল্লা, কাওসার মোল্লা, মামুন মোল্লা।