স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্জ্য অপসারণে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ব্যাপক উদ্যোগের কথা শোনালেও বাস্তবে এর তেমন প্রতিফলন দেখা যায়নি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পশুর বর্জ্য অপসারণের কথা বলা হলেও শনিবার বিকাল পর্যন্ত তা সম্পূর্ণরূপে অপসারণ সম্ভব হয়নি। সময়মতো বর্জ্য অপসারণ না করায় রাস্তার পাশে, পাড়া-মহল্লার অলিতে-গলিতে পড়ে থাকা আবর্জনার দুর্গন্ধে টেকা দায়। অনুমোদহীন অনেক জায়গায়ও পশুর হাট বসানো হয়েছিল, সেসব জায়গা এখনও অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে।
রাজধানীর বর্জ্যব্যবস্থাপনা নিয়ে এমনিতেই রয়েছে নানা অভিযোগ। রাস্তায় লোকচলাচল শুরু হওয়ার আগেই পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সব রাস্তাঘাট পরিষ্কার করার কথা ছিল, কিন্তু অনেক বেলা গড়িয়ে গেলেও তা হয়নি। এমনও দেখা গেছে, যাত্রীবাহী পরিবহন আর ময়লার ট্রাক পাশাপাশি যানজটে আটকা পড়ে আছে।
ডাস্টবিনগুলো রাখা আছে রাস্তার গা-ঘেঁষে। অনেক জায়গায় বাসস্ট্যান্ডের কাছে ডাস্টবিন থাকায় সেটি মানুষের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়েছে। সময়মতো ডাস্টবিন পরিষ্কার না করায় কাক ও কুকুর আবার তা ছড়িয়ে দিচ্ছে আশপাশে।
ঢাকা সিটি করপোরেশনকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করা হয়েছে নাগরিক সুবিধা জনসাধারণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সাধারণ মানুষ তা কতটা পাচ্ছেন -সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ। এমনকি ঈদের সময় কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে গিয়েও তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন।
গত ১৪ অক্টোবর ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই প্রশাসকই ঘোষণা দেন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীতে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হয়নি। বর্জ্যরে অসহনীয় গন্ধে রাজধানীর পরিবেশ দূষিত হয়ে গেছে।
লালবাগের বাসিন্দা মোখলেছুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ঈদের দিন থেকে লালবাগের বিভিন্ন অলিগলিতে কোনবানীর বর্জ্য পড়ে আছে। বর্জ্য অপসারণের জন্য সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। এতে করে উৎকট গন্ধে অনেক রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পারছে না। কোনো কোনো এলাকায় মানুষ ঘর থেকে বেরুতে পারছে না।
রাজধানীর শ্যামপুর এলাকায়ও একই অবস্থা বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী। তারা বলেন, দক্ষিণ সিটির কর্মকর্তারা তিন দিন আগে বর্জ্য অপসারণের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে যেভাবে আশ্বস্ত করেছিলেন ঠিক ততটাই নিরাশ করেছেন তারা। জবাবদিহিতা থাকলে তারা হয়তো এতটা অবহেলা করার সাহস পেতেন না।
ঢাকা উত্তরের প্রধান নির্বাহী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন বিপন কুমার সাহা জানান, এবার বর্জ্য নিষ্কাশনে বিশেষ রোড ক্লিনার মেশিন ব্যবহার করা হয়েছে। দুই সিটি কর্পোরেশনেই চারটি রোড ক্লিনার মেশিন, ঈদের দিন দুপুর ১২টা থেকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীর এবং ফায়ার সার্ভিসের কাছ থেকে বিশেষ যন্ত্রপাতি, পানির গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্যাভলন মিশানো পানি দিয়ে গবাদি পশুর রক্ত ও বর্জ্য ধুয়ে ফেলা হয়েছে। ব্লিচিং পাউডার ছিঁটানো হয়েছে।