শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ঋতুপর্ণা তৃষ্ণা: সেক্সুয়াল টেনশন

ঋতুপর্ণা তৃষ্ণা: সেক্সুয়াল টেনশন

শেয়ার করুন

বিনোদন ডেস্ক ॥ ভাবা যায়! মার্কিন মুলুকের বিখ্যাত মিয়ামি বিচটার আশপাশ এক্কেবারে আমাদের মন্দারমণির মতো! হলিউডি ছবিগুলোতেও ব্যাপারটা চোখে পড়েনি, কিন্তু টলিউডের ছবি দেখলাম ব্যাপারটা করে দেখিয়েছে।

ছবির শেষে নায়িকা ঢেউ থেকে উরসুলা অ্যানড্রুস স্টাইলে মাথার চুলের মধ্যে মোহিনী ঢঙে হাত চালাতে চালাতে উঠে আসছেন। ঠিক যেমন ভাবে ছবির প্রথম পর্বে মন্দারমণির বিচে নায়কের ক্যামেরায় ধরা দিয়েছিলেন। তখন নায়ক ছিলেন, এখন ক্যামেরা ছাড়া আর কিচ্ছু নেই। পরণে সেই একই বেশ—ক্রশে’র কাজ করা বিকিনি টপ আর নামমাত্র কাপড়ে তৈরী একটা সারং। নীচে লেখা, ‘মিয়ামি বিচ, ইউ এস এ’। সেখানেই ছবির ‘এক কাহিনী শেষ’।

আর কী একখানা কাহিনী মশাই! বিপাশা বসু-জন আব্রাহামের ‘জিসম’-এর ডিটো কপি। স্রেফ অমিলগুলো বলাই ভাল। এক—‘জিসম’-এ জন ছিলেন ব্যর্থ উকিল, এখানে নায়ক ফ্যাশন ফটোগ্রাফার। আর ‘জিসম’-এ শেষকালে জন আব্রাহামকে মারা যেতে হয়, এখানে নায়ককে ফাঁসিয়ে নায়িকা উধাও হয়ে যান। এই যা।

সেই নায়িকাকে দেখার জন্যই তো যাওয়া। ইয়ার্কি নয়, অমন সব পুরুষরক্তে টান মারা পোস্টার দেখে কে আর চুপচাপ বসে থাকতে পারে? ‘শেষের কবিতা’র লাবণ্য, ‘চতুরঙ্গ’র দামিনি, এবং ‘তৃষ্ণা’র তিয়াসা— তিন ছবিতে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর তিন রকমের সাহসিকতা। রবীন্দ্রনাথের ‘প্যাশনেট আণ্ডারকারেন্ট’ আর ‘সেক্সুয়াল টেনশন’-এ ভরপুর দুই নায়িকাকে পর্দা-জীবন দান করে তিনি এবার শাড়ি-বর্জিত, স্নানসুন্দরী। কখনও অন্তর্বাসে, কখনও স্নানবাসে, কখনও রাত্রিবাসে।

কিন্তু দেহ সাজাতে মিনিম্যালিজমের মধ্যেও রুচী প্রয়োজন। লাইটিং, সিনেম্যাটোগ্রাফি আর পোশাক পরিকল্পনার একমাত্র ল্য যদি হয় ঋতুপর্ণাকে কতটা অনাবৃত করা যায় সেই চিন্তা, তা হলে তো সমস্যা। ‘সেন্সুয়ালিটি’ আর যৌন সুড়সুড়ির মধ্যে ফারাকটা যে একটা সরু সুতোর ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। ‘জিসম’-এ বিপাশার েেত্র অমিত সাক্সেনা আর পুজা ভট্টের সে দিকে নজর ছিল। প্রযোজক-ডিষ্ট্রিবিউটর থেকে পরিচালকের চেয়ারে এসে প্রীতম জালান সেই শিল্পতত্ত্বটাই ধরতে পারলেন না।

তবে হ্যাঁ, স্বীকার করতে বাধা নেই, ঋতুপর্ণা- প্রীতম জুটি সাহস দেখিয়েছেন। বাংলা বাজারে কোনও নায়িকা এতটাও উন্মোচিত হতে পারেন, ‘তৃষ্ণা’র আগে জানা ছিল না। সেটা দর্শকের ভাল লাগলে কিন্তু বাজারী বাংলা ছবির নায়িকাদের রোলটাই পাল্টে যেতে পারে। নায়কের ‘প্রপ’ হিসেবে দুটো গান গেয়ে থেমে গেলে আর হবে না।

কিন্তু ঋতুপর্ণা, আপনি এই ছবিটা করে ঠিক কী প্রমাণ করতে চাইলেন বলুন তো? অভিনয়ে তো আপনি জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্তা। এখানে যে অভিনয়ের সুযোগ নেই, সে কথা আগে থেকে জানতেন না, এটা বিশ্বাস করতে রাজি নই। কেরিয়ারের এই পর্যায়ে এসে আপনার কী দরকার ছিল বিপাশা বসুর বাংলা সংস্করণ হওয়ার? বেশ তো ছিলেন রহস্যময়ী, জন্মদিনে বরাবর কেকের ওপর একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে। এবার যে সবাই আন্দাজ করে ফেলবে সেই ধাঁধাটা।

শোনা যাচ্ছে এ ছবিরও নাকি সিক্যুয়েল হবে। আর কেন?