শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > উপজেলা পরিষদের ক্ষমতা বাড়ছে

উপজেলা পরিষদের ক্ষমতা বাড়ছে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের মাসিক ভাতা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে উপজেলা পরিষদ স্বনির্ভর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদে জনবল নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র জানায়, এখন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মাসিক ভাতা নির্ধারিত ২০ হাজার ৫০০ টাকা, সঙ্গে যাতায়াত ও জ্বালানি সহায়তাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এখন এই মাসিক টাকার পরিমাণ ৪১ হাজার টাকা করা হচ্ছে।

অপরদিকে ভাইস চেয়ারম্যানরা পাচ্ছেন ১৪ হাজার ৫০০ টাকা, সঙ্গে অন্যান্য সুবিধা। এখন মাসিক টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে ২৯ হাজার টাকায় নির্ধারণ করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বিভাগ অনুমোদন করলে তা আদেশ আকারে জারি হবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আব্দুল মালেক দৈনিক বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করে তৃণমূলের গণতন্ত্র মজবুত করাই সরকারের উদ্দেশ্য। এজন্য স্থানীয় সরকারের সকল স্তরের প্রতিষ্ঠানকে স্বনির্ভর করা হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে ঘাটতি ছিল। সেগুলো অতিদ্রুত পূরণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

সূত্র জানায়, ভাইস চেয়ারম্যানদের তেমন কোনো প্রশাসনিক দায়-দায়িত্ব বা কাজ নেই। তাই এখন তাদের দায়িত্ব নির্ধারিত করে দেওয়া হচ্ছে। অনেক জায়গায় ভাইস চেয়ারম্যানদের বসার স্থানও নেই। তাদের বেশিরভাগেরই সামাজিত অনুষ্ঠানাদিতে অংশ নেওয়া ছাড়া আর কোনো কাজে অংশ নেই।

এদিকে উপজেলায় সহকারী কমিশনার (অর্থ) পদটি পরিষদ সৃষ্টির সময়ে সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু ১৯৯২ সালে উপজেলা পরিষদ বিলুপ্ত করা হলেও পদটি রয়ে গেছে। এখন এ পদে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এসব পদে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার (অর্থ) হিসাবে নিয়োগ করা হবে। নিয়োগ দেওয়া হবে সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা। আপতত অডিট অফিসারদের সারাদেশে এই পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে স্থানীয়ভাবে এ পদে নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে।

আইন অনুযায়ী স্থানীয় সকল দপ্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নথিতে উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে। হস্তান্তরিত ১৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উপজেলা ভিত্তিক দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন-ভাতাও পরিষদের হাতে ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু এগুলোর আদেশ জারি না হওয়ায় তা কার্যকর হচ্ছে না।

উপজেলা পরিষদ ব্যবস্থা ১৯৯২ সালে বাতিল হওয়ার আগে তিনজন কর্মকর্তার মাধ্যমে হস্তান্তরিত মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা প্রদানের প্রক্রিয়া নিষ্পত্তি করা হতো। প্রথমে সহকারী কমিশনার (অর্থ) নথি অগ্রগামী করতেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সই করার পর পরিষদের চেয়ারম্যান অনুমোদন করতেন। এখন এই ব্যবস্থা পুনর্বহাল হতে যাচ্ছে।

স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) আইনের ২৫ ধারা অনুযায়ী সকল সিদ্ধান্ত পরিষদের মাধ্যমে গৃহীত এবং পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃৃক অনুমোদনের বিধান রয়েছে। কিন্তু এ বিধান না মানায় অনেক ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়ে আছে। ক্ষেত্রবিশেষ ইউএনওরা স্থানীয় এমপিকেই গুরুত্ব দিয়ে থাকেন বেশি।

গত ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদের জন্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরিষদের আইনের ২৫ ধারায় স্থানীয় এমপিকে উপদেষ্টা হিসাবে রাখা হয়। পরিষদের কার‌্যাবলী সম্পাদনে এমপির ক্ষমতা পরামর্শকের।

উপজেলা পরিষদ গঠনের আগে মন্ত্রণালয় ভিত্তিক কর্মসম্পাদন কমিটি ছিল ইউএনও’র অধীনে। পরিষদ গঠনের পর এসব কমিটির প্রধান হবার কথা চেয়ারম্যানের। কিন্তু ৯৮ শতাংশ কমিটি আগের অবস্থায় রয়ে গেছে। আইনে উপজেলা পরিষদে হস্তান্তরিত ১৭ টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তা ও কর্মচারির আয়-ব্যয় উপজেলা পরিষদে ন্যস্ত করার কথা। কিন্তু তা না করায় এসব বিভাগের কোনো নথি চেয়ারম্যানের কাছে যাচ্ছে না। ইত্তেফাক