রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > উত্তরাঞ্চলে চামড়া ব্যবসায় ধস

উত্তরাঞ্চলে চামড়া ব্যবসায় ধস

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
দিনাজপুর: টানা হরতাল-অবরোধের ফলে বৃহত্তর দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের ৪টি জেলার চামড়া ব্যবসায়ে ব্যাপক ধস নেমেছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতায় ট্যানারি মালিকরা বিদেশে চামড়া পাঠাতে না পারায় এ অঞ্চলের চামড়ার পরিমাণ এবং মূল্যও দিন দিন কমে গেছে।

এ অবরোধ-হরতাল আরও কিছুদিন স্থায়ী হলে ব্যবসায়ীরা গোডাউনে রাখা চামড়ার পচন শুরু হবে এ আশঙ্কায় রয়েছে তারা।

পূর্বে এ সময়ে মাসে ৩/৪ কোটি টাকার চামড়ার ব্যবসা হলেও বর্তমানে সেটা কোটি টাকার নীচে নেমে এসেছে। এটা নিম্নমুখি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানায়, উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ চামড়া বাজার ছিল দিনাজপুরের রামনগর চামড়া বাজার। এখানে দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও পার্শ্ববর্তী নীলফামারী জেলার চামড়া বিক্রি হয় এই বাজারে। আর এখান থেকে পাঠানো হয় ট্যানারি মালিকদের কাছে। কিন্তু গত দুই মাস পার হলেও ব্যবসায় অবনতিই হচ্ছে। উরহধলঢ়ঁৎ১০
হরতাল-অবরোধ শুরুর আগে প্রতি ২০-২২ ফুটের ১নং গরুর চামড়ার মূল্য ছিল ২৪০০ থেকে ২৮০০ টাকা পর্যন্ত এখন মূল্য কমে সেই চামড়ার দাম হয়েছে ২ হাজার থেকে ২১০০ টাকা। ২নং গরুর চামড়া ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকার স্থলে ১০০০ থেকে ১২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ছাগলের চামড়া ১৪০-১৯২ টাকার স্থলে ১২০-১৭০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১০৫-১৪৫ টাকার স্থলে ৮৫-১১৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
প্রতিফুট চামড়ার মূল্য আগের চেয়ে ১৫ থেকে ২০টাকা কমে গেছে।

এতে প্রতিটি চামড়ায় দাম কমে গেছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। আর হরতাল-অবরোধে পাঠাতে না পারায় চামড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে পথে বসতে হবে তাদের।

জেলার ছোট-বড় মিলে প্রায় আড়াইশ ব্যবসায়ী চামড়া ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ও ঢাকায় চামড়া পাঠানোর জন্য রয়েছেন প্রায় ৩০-৪০ জন ব্যবসায়ী। আর কাঁচা চামড়া লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণসহ বিভিন্ন কাজের সঙ্গে জড়িত প্রায় দেড় শতাধিক শ্রমিক।

চামড়া শ্রমিক হাবিব বলেন, প্রতিদিন কাজ হলেও মহাজনেরা টাকা দিতে পারছেন না। দিন চুক্তিতে ২৫০ টাকায় কাজ করতে হচ্ছে। কাজও কমে গেছে।
উরহধলঢ়ঁৎ৩৩৩চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস জানান, স্বাভাবিকের চেয়ে কম সরবরাহ করা যাচ্ছে। হরতালে তারাগঞ্জ, পলাশবাড়ী, নাটোর ও ঢাকা এসব জায়গায় চামড়া পাঠানো হয়।

চামড়া আড়াই মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। এর বেশি সময় হলে চামড়ায় পচন ধরবে।

দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আখতার আজিজ জানান, এ সময়ে পশু জবাই কম হওয়ায় চামড়ার পরিমাণ কমে গেছে। আবার চামড়ার মূল্য কমে গেছে। ১৫দিনে একবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ঢাকায় পাঠানো হলেও সময় মত টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। এতে পুঁজি আটকে যাচ্ছে। রপ্তানিকারকরা চামড়া রপ্তানি করতে না পারায় এবং সংরক্ষণ অভাবে তারাও চামড়া নিতে চাচ্ছে না। আবার নিলেও টাকা দিতে পারছে না।

আবার এদিকে পুঁজির অভাবে চামড়া কেনা যাচ্ছে না। ক্রয় করলেও লোকসানের আশঙ্কায় সংরক্ষণ করে বেশি দিন রাখা যাবেও না। এ পরিস্থিতিতে চামড়া ব্যবসায় ব্যাপক ধস নেমেছে।