মোঃ সাগর আলী
ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:
জামালপুরের ইসলামপুরে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় বিএনপির পাঁচ নেতাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার পুলিশ গ্রেপ্তার বিএনপির ওই পাঁচ নেতাকে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি শহিদুল্লাহ সরকার (৫২), পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনির খান লোহানী (৪০), পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানা খোকন (৩৫), বেলগাছা ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আব্দুর রশিদ (৫০) ও স্থানীয় বিএনপির কর্মী মোহাম্মদ ধলা শেখ (৫২)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। উপজেলা বিএনপি নেতাদের অভিযোগ গ্রেপ্তার নেতা কর্মীদের নাশকতার পুরোনো মামলার আসামি করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশ জানায় গ্রেপ্তারকৃতরা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি না হলেও তারা মামলায় উল্লেখিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা ২৪ নম্বর মামলায় বিএনপি নেতা শহিদুল্লাহ সরকার ও যুবদল নেতা মনির খান লোহানীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে তারা এজাহারভুক্ত আসামি নন।
ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইসলামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান মোড়ল দৈনিক বাংলাভূমিকে জানান, তারা এজাহারভুক্ত আসামি না হলেও মামলায় উল্লেখিত ঘটনায় সম্পৃক্ততা রয়েছে।
এ ছাড়া গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা ১৩ নম্বর মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ, মোহাম্মদ ধলা শেখ ও যুবদল নেতা সোহেল রানা খোকনকে। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দেলোয়ার হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা অজ্ঞাত আসামি। সে কারণেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
থানা হাজতে পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনির খান লোহানী বলেন, ‘ইসলামপুর পুরোনো মার্কাস মসজিদে এশার নামাজ পড়ে বের হওয়ার মাত্রই বিনা ওয়ারেন্টে আমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’
হাজতে আরেকজন বেলগাছা ফকিরপাড়া ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমার নামে কোনো মামলা নেই। কিন্তু গভীর রাতে ঘুম থেকে ডেকে পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করেছে।’
ইসলামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নবাব বলেন, এজাহারভুক্ত আসামি না হলেও পুলিশ আমাদের পাঁচ নেতা কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।’
উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সুলতান মাহমুদ বাবু দৈনিক বাংলাভূমি কে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত বিএনপির নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন কোনো মামলা নেই। জামিন অযোগ্য পুরোনো গায়েবি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, ‘শনিবার কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্যে জেলা বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নেতা কর্মীদের মাঝে এক ধরনের ভয়ভীতি সঞ্চার করতেই এ গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। নেতা কর্মীদের গভীর রাতে ঘুম থেকে ডেকে এনে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’
ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, ‘ বিনা কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয় না। গ্রেপ্তারকৃতদের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’