শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > ইউরোপে আম নিষিদ্ধ হওয়ায় ভারতীয়রা খুশি

ইউরোপে আম নিষিদ্ধ হওয়ায় ভারতীয়রা খুশি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ইউরোপের বাজারে ভারতের আম নিষিদ্ধ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এর ফলে ‘ফলের রাজা’ খ্যাত আমের দাম পড়ে গেছে ভারতে। রফতানি বন্ধ হওয়ার স্থানীয় বাজারে স্বল্পমূল্যে প্রচুর আম পাওয়া যাচ্ছে। এতে ভারতের নিম্ন আয়ের মানুষসহ সাধারণ ক্রেতারা বেশ খুশি।

দিল্লির মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য পূর্ণিমা ধর। প্রতি সপ্তাহে ফলমূল ও শাকসব্জি কিনে রাখেন তিনি। কিন্তু ইউরোপের বাজারে ভারতের আম নিষিদ্ধের খবর শোনার পর দ্রুত বাজারে ছুটে যান। হরেক রকমের দামি আম কিনে আনেন যা তাদের মতো পরিবারের পক্ষে আগে কেনা সম্ভব হতো না।

তিনি বলেন, ইচ্ছামতো আম কিনতে পেরে আমি খুবই খুশি। বিশ্বাস করতে পারছি না এতো দামি দামি আম এমন সস্তায় কিনতে পারবো।

ইউরোপের বাজারে মূলত ভারতের আলফাঁসো জাতের উচ্চমূল্যের আম নিষিদ্ধ হয়েছে। আগামী দেড়বছর ইউরোপের বাজারে এ আম রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। এরসঙ্গে কিছু সবজিও রয়েছে।

১ মে থেকে কার্যকরী হওয়া আলফাঁসো আম এখন রেকর্ড পরিমাণে কম দামে বিক্রি হচ্ছে। বলা হচ্ছে, বিগত দুই দশকে এ আমের মূল্য এতোটা পড়েনি। মাত্র ২-৪ ডলারে প্রতি কেজি আমা পাওয়া যাচ্ছে যা স্বাভাবিক দামের চেয়ে অর্ধেক।

মুম্বাইয়ের এগ্রিকালচারাল প্রডিউস মার্কেট কমিটির পরিচালক সঞ্জয় পানসারে জানান, রফতানি নিষিদ্ধে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। এটি ইউরোপের মতো লোভনীয় বাজারে দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলতে পারে।

তিনি বলেন, দাম নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। আমাদের প্রধান সমস্যা আমরা ইউরোপের মতো বাজার হারাতে যাচ্ছি।

আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের অর্ধেক অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। এখন আমরা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছি।

ভারতের রফতানি করা আমের চালানের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ মাছি পাওয়ার কারণে সম্প্রতি ইইউ ভারতীয় আম আমদানিতে সদস্য দেশগুলোর প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি।

ইইউ এর ‘ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেশন সিস্টেম’ পরীক্ষায় ভারতের এসব ফল এবং সবজি মানোত্তীর্ণ হতে পারেনি উল্লেখ কমিটি জানিয়েছে, ‘এ সব পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ ছড়িয়ে পড়লে ইউরোপের কৃষি ও কৃষি উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর এনভায়রনমেন্ট ফুড অ্যান্ড রুরাল অ্যাফেয়ার্স এ নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন জানিয়ে বলেছে, এ নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজনীয় কারণ এ সব কীটপতঙ্গ যুক্তরাজ্যের ৩২১ মিলিয়ন পাউন্ডের টমাটো ও শসা সবজি উৎপাদন খাতকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

প্রতিবছর ভারত থেকে ইউরোপ প্রায় চার বিলিয়ন ডলার মূল্যের ফল, শাক-সবজি ও অন্য কৃষিপণ্য আমদানি করে থাকে। একই পরিমাণে ফলমূল বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকেও আমদানি করে থাকে ইইউ। আলফাঁসো আম ব্রিটেনে খুবই জনপ্রিয়।

সমালোচনা
আম নিষিদ্ধে বেজায় খেপেছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। তারা দ্রুত এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানান। এমনকি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে নালিশের হুমকি দিয়েছেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, আম নিয়ে ইউরোপের মাথা ব্যথা তা দূর করার জন্য তারা আমের ওপর ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছি। এখন আর ভয়ের কোনো কারণ নেই।

এদিকে ইউ’র এমন সিদ্ধান্তে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে ব্রিটেনে প্রবাসী। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটেনের আইনপ্রণেতা কেইথ ভাজ এ ঘটনাতে ‘ইউরো ননসেন্স’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি এর মাধ্যমে শত শত ব্যবসায়ীকে বিপদে ফেলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।

আলোচনায় বসবেন ক্যামেরুন

চলতি লোকসভা নির্বাচন শেষে ভারতে নতুন যে প্রধানমন্ত্রী আসবেন তার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম