রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ইউপি নির্বাচন : সহিংসতার দায় নেবে না ইসি

ইউপি নির্বাচন : সহিংসতার দায় নেবে না ইসি

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥

ঢাকা : চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে যেকোনো ধরনের সহিংসতা, সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাতে নির্বাচন কমিশনের সরাসরি দায়িত্ব নেয়ার কোনো কারণ দেখছেন না নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ। তিনি বলেন, ‘এটা অদ্ভুত কথা- নির্বাচনে কোথাও প্রাণহানি ঘটলে নির্বাচন কমিশন কেন তার দায় নেবে। কমিশন তো কোথাও দাঁড়িয়ে থেকে নির্বাচন করে না।’

রোববার (২৭ মার্চ) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধম ধাপের ইউপি নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় অন্তত ২৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। অনেকেই বলছে, কমিশন এর দায় এড়াতে পারে না- এমন প্রশ্নের জবাবে শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনে নিজেদের মধ্যে ইলেকশন হয়, তাদের দলাদলির প্রশ্ন থাকে, সম্মানের প্রশ্ন থাকে। এমন নয় যে নতুন করে এসব ঘটনা ঘটছে। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি কেন্দ্রে অনেক লোক মারা গেছে। আমাদের এখানে আগেও নির্বাচনী সহিংসতায় অনেকেই মারা গেছে।’

‘এখন এটা দলীয় নির্বাচন হচ্ছে, সবাই আচরণবিধি মেনে চলবে এটাই স্বাভাবিক ছিল। কিছু কিছু ব্যক্তির অতি উৎসাহের কারণে এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম হচ্ছে, এর ফলশ্রুতিতে আমরা কিছু কিছু জায়গায় কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। ভবিষ্যতে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে’- বলে জানান এই কমিশনার।

শাহ নেওয়াজ আরো বলেন, ‘কেউ নিজস্ব এলাকায় মারামারি করলে তা নির্বাচন কমিশন প্রতিহত করতে পারে না। দেশে স্বাভাবিক অবস্থায় কিছু কিছু জায়গায় খুন-জখম হয়, তার অর্থ এই না যে, নির্বাচনের সময় হলেই খুন জখম হয়। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিছু লোক বাড়াবাড়ি করবে কিছু লোক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আইনশঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। আমরা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছি- নির্বাচনে কেউ অনিয়ম করার চেষ্টা করলে তারা কঠোর ব্যবস্থা নিবে। কেউ যেন বাড়াবাড়ি করতে না পারে। কেউ বাড়াবাড়ির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করাসহ যা ব্যবস্থা নেয়ার তার সবই নিতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা কারো খামখেয়ালি বরদাস্ত করবো না।’

প্রাণহানির দায় তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর উপর পড়ে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটার দায় কার উপর পড়ে আপনারা খোঁজ নিলে জানতে পারবেন। তবে আমরা যেটা বলছি- নির্বাচনে বিরুদ্ধ পক্ষ মারামারি করলে, নিজেরা পাশাপাশি দু’বাড়ি বা পাড়ায় মারামারি করলে এটা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নেয়ার কোনো কারণ সরাসরি আমি দেখি না। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া আছে কোনো রকম নির্বাচনী সহিসংসতা যেন না হয়, হলে কঠোর ভূমিকা যেন গ্রহণ করা হয়। কাউকে যেন ছাড় দেয়া না হয়।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আগে বলেছি, যেখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হবে, সেখানে যারা জড়িত তাদেরকে যেন সরাসরি গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে যেন চরম ব্যবস্থা নেয়া হয়। আমরা সব সময় আইনের পক্ষে ন্যায়ের পক্ষে থেকে নির্বাচন করার চেষ্টা করি।’

নির্বাচনে অনেক জায়গায় সহিংসতার পরও শুধুমাত্র সাতক্ষীরায় ব্যবস্থা নেয়া হলো কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেখানে যেখানে সহিংসতা হয়েছে যেটা বাস্তবমুখী সেখানে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যেসব এলাকায় বিগত দিনে সহিংসতা বেশি ঘটেছে, সেখানে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পূর্ববতী ইউপি নির্বাচনেও সেখানে প্রচুর সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। আমরা আশা করছি পরবর্তী ধাপগুলোতে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অনেকেই মনে করছেন, দলীয় কাঠামোতে গ্রামীণ সমাজে নির্বাচন অনেকটা সমস্যা সৃষ্টি করছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন এ সকল আইন আমরা করি না। দলীয় পদ্ধতি হবে, নাকি প্রতীকে হবে এসব আইন পার্লামেন্ট থেকে করা হয়। আমাদের দায়িত্ব্ আইনের বাস্তবায়ন করা। বাস্তবায়ন করতে হলে স্বাভাবিকভাবে আইন হওয়ার পর আমাদের তাড়াহুড়া করতে হয়েছে। আর যে সময় নির্বাচনের জন্য আইন পাশ হয়েছে আর পরেই নির্বাচনের সময় এসেছে। ৫ বছর শেষ হওয়ায় বাধ্যবাধকতা থাকায় এ কারণে তাড়াহুড়া করতে হয়। আইনের আলোকে বিধি উপবিধি তৈরি করতে হয়।’

ইউপি নির্বাচনের পরবর্তী ধাপগুলোর জন্য নতুন কোনো দিকনির্দেশনা আছে কিনা জানতে চাইলে শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছি- সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনের জন্য যতটুকু শক্ত হওয়া দরকার, সব দিক দিয়ে যেন তারা সেটুকু শক্ত হয়। যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে আছে সেই সকল বাহিনী ও যারা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা তাদের প্রতি দেয়া নির্দেশনায় কোনো গাফিলতি সহ্য করা হবে না।’