শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ইউপি নির্বাচনেও বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকছে

ইউপি নির্বাচনেও বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকছে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: সরকার আইন করার পর সে আলোকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন বিধিমালাও সংশোধন করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন হচ্ছে। এক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার পর একজন প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে। ফলে দলের মনোনয়ন বঞ্চিতদের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকছে।

ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেছেন, তারা প্রস্তাবিত বিধিমালা চূড়ান্ত করেছেন। আগামী দুই-একদিনের মধ্যেই তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় যাচাই করে অনুমোদন দিলে চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করবে ইসি। এক্ষেত্রে কেবল চেয়ারম্যান পদে দলীয় এবং সদস্য পদে নির্দলীয়ভাবে ভোট হবে।

ইসির খসড়া বিধিমালায় বলা হয়েছে- রাজনৈতিক দলের চেয়ারম্যান প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক কিংবা সমপর্যায়ের পদাধিকারী অথবা তাদের কাছ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্বাক্ষরিত এই মর্মে প্রত্যায়ন থাকবে যে, ওই প্রার্থীকে ওই দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো রাজনৈতিক দল কোনো ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে পারবে না। একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে ওই দলের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর কোনো একটি আসনে বা সংশ্লিষ্ট ইউপিতে কেবল একজন ব্যক্তিকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল।

এক্ষেত্রে কোনো আসনে দলের একাধিক ব্যক্তি মনোনয়ন প্রত্যাশী হলে এবং তাদের একজন দল থেকে মনোনয়ন পেলে অন্যজন স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। যে বিধানটি পৌরসভা নির্বাচনেও ছিল। যদিও সংসদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সংসদ নির্বাচনে প্রথমে দল একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়। এরপর প্রার্থিতা বাছাইয়ের পর প্রত্যাহারের সময় সংশ্লিষ্ট দল একজন ব্যক্তিকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। ফলে অবশিষ্টরা মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছেন বলে গণ্য হয়। তখন কোনো প্রার্থীই আর স্বতন্ত্র থেকেও নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন না।

তবে দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের স্থানীয় (পৌরসভা) নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছিল। এক্ষেত্রে অনেক পৌরসভায় আওয়ামী লীগ, বিএনপির নেতারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। সেসব প্রার্থীকে আইনের ভাষায় স্বতন্ত্র হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়।

ইসির খসড়া বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, কোনো দল কাউকে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষমতা দিলে তা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ইসিকে তফসিল ঘোষণার সাত দিনের মধ্যেই জানাতে হবে। এদিকে কোনো ভোটার একই পদের জন্য একাধিক মনোনয়নপত্রের সমর্থক বা প্রস্তাবকারী হতে পারবেন না।

নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচনকে বা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেবেন সংশ্লিষ্ট সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। এক্ষেত্রে এবারও প্রজাতন্ত্রের অনেক কর্মকর্তাকে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। কেননা, এখনও প্রায় শতাধিক উপজেলায় ইসির কর্মকর্তা নেই।

আবার চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ভোটগ্রহণের আগে কেউ মারা গেলে নির্বাচন স্থগিত করে পুনরায় তফসিল ঘোষণার বিধান রাখা হচ্ছে। তবে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না। ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো দল একটি ইউপির জন্য ৩০ হাজারের বেশি ব্যয় করতে পারবে না। এছাড়া ১০ হাজার টাকার বেশি চেক ছাড়া দান করতে পারবে না। এই বিধান দল না মানলে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ অর্থদণ্ড গুনতে হবে।

দলের ব্যয়ের এ হিসাব দাখিল করতে হবে নির্বাচন শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে।

এদিকে কোনো প্রার্থী, ব্যক্তিগত ৫০ হাজার এবং নির্বাচনী ব্যয় হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন। আর সদস্য পদের প্রার্থীরা ব্যক্তিগত ১০ হাজার এবং নির্বাচনী ব্যয় হিসেবে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২৯ মার্চের মধ্যেই দেশের উপকূলীয় ২১ উপজেলার মাধ্যমে ইউপি নির্বাচন শুরু করা হবে। ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের তালিকা পাঠানো হয়েছে ইসিতে। এগুলোর মধ্যে যখন যেগুলোর সময় শেষ হবে, সে মোতাবেক কয়েক দফায় নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে। সর্বশেষ ইউপি নির্বাচন হয়েছিল ২০১১ সালে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম