আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই মুসলমানরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের চক্ষুশুল। মুসলমানরা যে তাকে পছন্দ করে বিষয়টি তেমনও নয়। স্বভাবতই ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসাটা মেনে নিতে পারেননি মুসলমান জনগোষ্ঠী। পাশাপাশি তারা ভবিষ্যত নিয়েও শঙ্কিত ছিল। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগে থেকে ইসলাম বিদ্বেষী নানা ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। আর ক্ষমতায় এসেই তিনি সাতটি মুসলিম প্রধান দেশের মানুষের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্বাহী আদেশ জারি করেন। সম্প্রতি এক জরিপে, মার্কিন মুসলমানদের শঙ্কা আর উদ্বেগের বিষয়টি আরো স্পষ্ট। শুধু ধর্মের কারণে বৈষম্যমূলক আচরণ ও অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপে দেখা গেছে, ১০০১ জন মার্কিন মুসলিম বলেছে দিন দিন তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে বাস করা কঠিন হয়ে উঠছে। ৪৮ শতাংশ বলেছে , গত এক বছরে তারা অন্তত একটি বৈষম্যমূলক ঘটনার শিকার হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, শুধু ইসলাম ধর্মালম্বী হওয়ার কারণে নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মুসলমানদের। তারা সেখানকার সমাজে মূল ধারা থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছে ধর্মের কারণে। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমোনে সাড়ে ৩৩ লাখ মুসলিম মানুষের বাস। জরিপে অংশ নেওয়া দুই-তৃতীয়াংশ মার্কিন মুসলিম বলেছেন, তারা মার্কিন প্রশাসনের নেওয়া সিদ্ধান্তে অসোন্তুষ্ট। ৭৪ শতাংশ বলেছে, তাদের সঙ্গে ট্রাম্পের আচরণ বন্ধুসুলভ নয়।
ট্রাম্প কি আপনাদের বিচলিত করছেন-এমন প্রশ্নের জাবাবে ৬৮ শতাংশ জানিয়েছে, হ্যাঁ সূচক উত্তর দিয়েছে। এটা ঠিক বারাক ওবামার আমলের উল্টো চিত্র। তার আমলে মুসলমানরা বলেছিল, দেশ ঠিক পথে এগুচ্ছে। তারা নিরাপদ বোধ করছে।
এবার জরিপে এক তৃতীয়াংশ বলেছে, তারা অজানা আতঙ্কে ভুগছে। এক পঞ্চমাংশশেল মতে, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের আপত্তিকর নামে ডাকে এবং বাজে ইশারা করে। ছয় শতাংশ দাবি করেছে, তারা শারীরিকভাবে হুমকির শিকারও হয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়া অর্ধেক মুসলমান বলেছে, মার্কিন প্রশাসন বা নাগরিকই নয়, গণমাধ্যমও তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করে। তবে মাত্র ৯ শতাংশ বলেছে, তারা মার্কিন নাগরিক হিসেবে গর্বিত।
নেকাব ও হিজাব পরা এক মুসলিম নারী বলেছেন, ‘পাবলিক বাসে আমাকে সন্ত্রাসী বলে সম্বোধন করা হয়। কিন্তু কেউ এর প্রতিবাদ করেনি, আমার পাশে দাড়ায়নি। তুমি যদি মুখ ঢেকে চলো তাহলে মার্কিনিরা মনে করবে তুমি বিপজ্জনক। এ কারণে আমি নেকাব পরা বাদ দিয়েছি।’
পিউ রিসার্চ বলছে, ‘প্রকৃতপক্ষে অ-মুসলিমদের থেকে মসুলিমরাই জঙ্গিদের নিয়ে শঙ্কায় থাকে। বিশেষ করে যারা ধর্মের নামে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী তৎপরতা চালায়। যদিও অনেক মুসলমান বলছেন, স্বল্প পরিমাণেও হলেও মার্কিন মুসলমানদের অনেকে উগ্রপন্থীদের সমর্থন করে। কারো কারো মতে, ধর্ম, রাজনীতি বা সামাজিক কারণে জন্য বেসামরিক নাগরিকদের ওপরও হামলা চালানো ঠিক আছে। তবে এ সংখ্যা খুবই নগন্য।’ সূত্র: আল-জাজিরা।