আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
ভারতের আসামে নাগরিক তালিকা (এনআরসি) হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। এদিকে, সেখানকার লোকজনকে আশ্বাস দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, রাজ্যে কোনো এনআরসি হবে না। কোনও ভাগাভাগি করতে দেব না। তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। আমরা আপনাদের পাহারাদার।
লোকসভা ভোটেও এনআরসি নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি। গত মার্চে আলিপুরদুয়ারের এক সভায় এসে অমিত শাহ জানিয়েছেন, এবার পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি হবে। এর জবাবে মমতা বারবার বলেছেন, কিছুতেই এই রাজ্যে এনআরসি করতে দেওয়া হবে না।
আসামে এনআরসি থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখ মানুষ। মমতা বলেন, আসামে যারা বাদ পড়েছে তার মধ্যে ১৩ লাখ বাঙালি, ১ লাখ হিন্দুভাষী এবং ১ লাখ পাহাড়ি। ওই বাঙালিদের মধ্যে বেশির ভাগ রাজবংশীকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমি তো ভাবতে পারি না যে বাংলায় শুধু বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবে। দরকার হলে বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবে না, শুধু মানুষ থাকবে।
রাজবংশীদের লক্ষ করে তিনি বলেন, আমরা রাজবংশীদের ভালবাসি। ওদের গিয়ে মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। তাদের বলা হচ্ছে, তোমরা রাজবংশী নাগরিকত্ব পাবে, তারা এখানে থাকবে, বাঙালিরা থাকবে না। তা কখনও হয়? রাজবংশী ভাইবোনদের কাছে আমার ছোট্ট একটা তথ্য। আমি ভুল হলে ক্ষমা করবেন। আপনাদের ভালবাসি তাই বলছি, কারও কথায় ভুল করবেন না।
এই ‘বিপদে’ তিনি এবং তার দলই একমাত্র রক্ষাকারী বলে মনে করিয়ে দিয়ে মমতা বলেন, আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। আমাদের সরকার আপনাদের পাশে ছিল, আছে এবং আগামীতেও থাকবে। আমরা আপনাদের পাহারাদার।
অপরদিকে, মমতার বক্তব্য শোনার পর বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, এনআরসি নিয়ে বিভ্রান্তি এবং আতঙ্ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ছড়াচ্ছেন। রাজনৈতিক লাভ তুলতে প্রচার করছেন। আগে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হবে। তারপরে এনআরসি হবে। বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনি বলেন, কোনও হিন্দুকে রাজ্য থেকে যেতে হবে না।