বাংলাভূমি ডেস্কঃ
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও ‘সময়োচিত সংস্কার পদক্ষেপ’ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছে বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গ। আর বাংলাদেশে আগামী সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনা চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সংবাদ সংস্থাটি।
সংবাদ সংস্থাটিতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) টানা চতুর্থ মেয়াদে জয়ী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিজয়ের কারণ ‘কেবলমাত্র তার অনেক প্রতিপক্ষ কারাগারে আছেন বা আইনি ফাঁদে পড়েছেন-এটা নয়; বরং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তার সাফল্যের কারণেই এটা ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির সময়োপযোগী সংস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণপ্রাপ্তির পটভূমিতে ব্লুমবার্গ দুটি উপ-শিরোনামসহ ‘বাংলাদেশ লিডার বেটস আইএমএফ-ম্যান্ডেটেড রিগর উইল পে অফ ইন পোলস’ শিরোনামের নিবন্ধটি প্রকাশ করে। এতে আরও বলা হয়, পুরো তহবিল পেতে শেখ হাসিনাকে আরও সংস্কার করতে হবে।
নিবন্ধে বলা হয়, গত জুলাই মাসে আইএমএফের সহায়তা চাওয়া দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশের মধ্যে সর্বশেষ ছিল বাংলাদেশ। দেশটি দ্রুত জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধির পর প্রথম ঋণ অনুমোদন পেয়েছে। ৭৫ বছর বয়সি শেখ হাসিনা এই পদক্ষেপ নিতে কোনো কুণ্ঠাবোধ করেনন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিয়েতনাম রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ-অর্থনৈতিক সহযোগিতায় গুরুত্বারোপ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত পাম ভিয়েত চিয়েন বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে বিদায়ি সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি একথা বলেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে তারা দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের মধ্যে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম এবং বিজয় অর্জনের মতো বেশকিছু ক্ষেত্রে অভিন্ন মিল রয়েছে। ভিয়েতনামের স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রতি এ দেশের জনগণের প্রশংসার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতীতে পাকিস্তানি জান্তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্লোগান ছিল, ‘বাংলা হবে ভিয়েতনাম।’
কৃষি খাতের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এ দেশের জনসংখ্যা বিপুল, তাই আমরা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে গবেষকদের নিয়োজিত রেখেছি। প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে কানেকটিভিটির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সফলভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য শেখ হাসিনা ভিয়েতনামের বিদায়ি দূতকে ধন্যবাদ এবং তার দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে সফলতার প্রতি অভিনন্দন জানান।
ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত পাম ভিয়েত চিয়েন নিজেকে ‘বাংলদেশের বন্ধু’ হিসাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ভিয়েতনামের সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্পর্ক রয়েছে। ভিয়েতনামী নেতার পক্ষে রাষ্ট্রদূত দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীকে ভিয়েতনাম সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রপ্তানি ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি লাভ করেছে। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাতে উভয় দেশ সহযোগিতা আরও জোরদার করতে পারে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।