শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > জাতীয় > আতঙ্কে গাড়ি নামাননি মালিক-শ্রমিকরা, আমরা অনুরোধ করেছি

আতঙ্কে গাড়ি নামাননি মালিক-শ্রমিকরা, আমরা অনুরোধ করেছি

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥

ঢাকা: বেপরোয়া বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে এবং বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাজধানীসহ দেশজুড়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ‘অলিখিত ধর্মঘট’ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মালিক-শ্রমিকরা আতঙ্কে রাস্তায় গাড়ি নামাননি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের অনুরোধ করা হয়েছে গাড়ি নামানোর জন্য।

বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে মন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।

ঢাকাসহ সারাদেশে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের গাড়ি না নামানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা ভাবছে গাড়ি নামালে গাড়ি ভেঙে ফেলবে, পুড়িয়ে ফেলবে- এই আতঙ্কে গাড়ি নামাচ্ছে না। কিন্তু আজকে তো পরিস্থিতি ওরকম নেই। শিক্ষার্থীদের অবরোধ ওরকম নেই। সেজন্য আমরা মালিক-শ্রমিকদের অনুরোধ করেছি রাস্তায় গাড়ি নামানোর জন্য, দেখা যাক তারা কী করে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ৯ দফা দাবি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, তারা যে দাবি দিয়েছে, সব সমাধান হয়ে যাবে প্রস্তাবিত পরিবহন আইন সংসদে পাস হলে। আইনের খসড়া আগামী মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন হবে। এরপর সংসদে পাস হবে। আইন পাস হওয়ার পর বাস্তবায়ন যখন হবে, তখন সব সমস্যারই সমাধান হবে, তাদের দাবি পূরণ হয়ে যাবে।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী মনে করেন, এই আইন বাস্তবায়ন হলে রাস্তায় মাছির মতো পাখির মতো যে মানুষ মারা যায়, এটা আর থাকবে না, সবাই সতর্ক হয়ে যাবে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিএনপির পক্ষ থেকে পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, বিএনপির নেতাদের আর এখন অন্য কোনো উপায় নেই। তারা কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ভর করবে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ওপর ভর করবে। তাদের সাহস, ক্ষমতা ও সক্ষমতা কোনোটাই নেই।

গত রোববার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া দুই বাসের পাল্লাপাল্লিতে চাপায় পড়ে শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। আহত হন আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে হাসতে দেখা যায়।

দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে তখন থেকেই আন্দোলনে নামেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা সরকারের কাছে ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ী বেপরোয়া চালককে ফাঁসি দিতে হবে; নৌ-পরিবহনমন্ত্রীকে নিঃশ্বর্ত ক্ষমা চাইতে হবে; শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে; প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিড ব্রেকার দিতে হবে; সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের দায়ভর সরকারকে নিতে হবে; শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে- থামিয়ে তাদের নিতে হবে; শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে; ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না এবং বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।